চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

টানা বৃষ্টিতে খানা-খন্দে ফের পুরোনো চেহারা

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকুণ্ড

৯ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:১০ অপরাহ্ণ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডে অর্ধ শতাধিক পয়েন্টে ছোট-বড় খানা-খন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এতে একের পর এক যানবাহন দুর্ঘটনা কবলিত হচ্ছে। ফলে আতংকিত হয়ে উঠেছেন গাড়ি চালক ও যাত্রীরা। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সড়কের এ বেহাল দশা হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। 

 

সরেজমিনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বড়দারোগারহাট থেকে সিটি গেট পর্যন্ত এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বন্দরনগরী চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার উপজেলার ৩৮ কি.মি. দীর্ঘ সড়কের অর্ধ শতাধিক পয়েন্টে প্রচুর খানা-খন্দ তৈরি হয়েছে। দেখা গেছে বড় দারোগারহাট, টেরিয়াইল, ছোটদারোগারহাট, নুনাছরা, পন্থিছিলা, পৌরসদরের উত্তর ও দক্ষিণ বাইপাস, ফকিরহাট, শুকলালহাট, বাড়বকু-, কুমিরা, কদমরসুল, মাদামবিবিরহাট, ভাটিয়ারী ও ফৌজদারহাটের বিভিন্ন স্থানে কোথাও ছোট ছোট অসংখ্য গর্ত, আবার কোথাও বড় আকৃতির খানা-খন্দ সৃষ্টি হয়েছে।

 

মহাসড়কের যাত্রী ও গাড়ি চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এসব গর্তগুলো খুবই ভয়াবহ হয়ে উঠে রাতের আঁধারে। বৃষ্টির সময় গর্তগুলো পানিতে ডুবে থাকে। এসময় খানা-খন্দ আর ভালো রাস্তা সব একই রকম লাগে। ফলে দূরাগত যানবাহন হটাৎ গর্তে পড়ে দিক হারিয়ে ফেলে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

 

পরিদর্শনকালে কথা হয় মহাসড়কের নিত্য যাত্রী মো. আনোয়ার হোসেনের সাথে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আনোয়ার জানান, টানা বৃষ্টি শুরু হওয়ার সাথে সাথে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। কিছু কিছু স্থানের গর্ত দেখলে মনে হয় না যে এটি মহাসড়ক। গাড়িতে বসলে ঝাঁকুনি খেতে খেতে পেট ব্যথা হয়ে যায়। এখানে যেকোন মুহূর্তে দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। তাই মহাসড়ক দ্রুত সংস্কার করা জরুরি। মহাসড়কের গাড়ি চালক মো. শাহীন। সীতাকু- থেকে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে কার ভাড়ায় চালান তিনি। প্রতিদিন সড়কে যানবাহন নিয়ে চলার অভিজ্ঞতায় শাহীন বলেন, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হয়েছে মহাসড়কে। এখন রিস্ক নিয়েই গাড়ি চালাতে হচ্ছে। সোমবার রাতে উপজেলার শুকলালহাট এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যানের চালক বৃষ্টিতে ডুবে থাকা গর্ত দেখতে না পেয়ে গাড়ি সড়কের গর্তে ফেললে তীব্র ঝাঁকুনি দিয়ে সামনের দুই চাকা খুলে সড়কের বাইরে চলে যায়। পরে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করে। এভাবেই বৃষ্টিতে ডুবে থাকা গর্ত আরো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে বলে আশংকা করছেন অন্যান্য গাড়ি চালকরা।

 

জানা যায়, গত ঈদের আগে মহাসড়কের স্থায়িত্ব রক্ষায় টানা সংস্কার কাজ পরিচালনা করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। এসময় সড়কের একপাশ বন্ধ রেখে কাজ করায় তীব্র যানজটে নাকাল হতে হয়েছে গাড়ি যাত্রীদের। দামি পলিমার মোডিফাইড বিটুমিন (পিএমবি) দিয়ে এ সংস্কার কাজ করার পর বলা হয়েছিলো মহাসড়ক দীর্ঘস্থায়ী হবে। কিন্তু বাস্তবে কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই সড়কের সেই পুরোনো ক্ষতবিক্ষত চেহারা বেরিয়ে এসেছে। যা হতাশ করেছে সংশ্লিষ্টদের।

 

বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, সওজ জানিয়েছে টানা বর্ষণের কারণে গর্ত ভরাট করতে পারছে না তারা। এ অবস্থায় রাতের বেলায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি। কারণ, বৃষ্টির পানিতে গর্ত ভরাট হয়ে থাকায় সেগুলো অনুমান করা যায় না। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সওজ সীতাকুণ্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ  চৌধুরী প্রতিবেদককে বলেন, আমরা মহাসড়কের ব্যাপক সংস্কার কাজ করেছি। সামান্য কিছু অংশ বাকি ছিলো। বৃষ্টির কারণে সেখানেই মূলত গর্ত হয়েছে। বৃষ্টি থামলেই দ্রুত সড়ক সংস্কার করা হবে।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট