চট্টগ্রাম শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

চবি উত্তরণের সহায়তা পেলো হাজার শিক্ষার্থী

চবি সংবাদদাতা

২৭ জুলাই, ২০২৩ | ১২:০২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের সংগঠন উত্তরণের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে গত এক বছরে ১ হাজার শিক্ষার্থী সহায়তা পেয়েছে। এই সময়ে সংগঠনটি অনুদান পেয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ১৬৭ টাকা। বর্তমানে সংগঠনটির ফান্ডে ৯১ হাজার ৯৫২ টাকা জমা আছে।

 

বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার মিলনায়তনে আয়োজিত বৃত্তি প্রদান ও বার্ষিক হিসাব উপস্থাপন অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন উত্তরণের প্রধান নির্বাহী নুর নবী রবিন। এ সময় চবির বিভিন্ন বিভাগের ৬ জন শিক্ষার্থীর হাতে আয়েশা ছিদ্দিকা মেধা বৃত্তির নগদ অর্থ তুলে দেওয়া হয়।

 

উত্তরণের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন আয়েশা ছিদ্দিকা মেধাবৃত্তি প্রোগ্রামের পৃষ্ঠপোষক প্রফেসর শহীদ উদ্দিন মাহমুদ, আয়েশা ছিদ্দিকা, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, সহকারী অধ্যাপক খন্দকার আলী আর রাজী, ইন্টারন্যাশনাল অর্গনাইজেশন ফর মাইগ্রেশান (আইওএম) কর্মকর্তা তারেক মাহমুদ।

 

উত্তরণের প্রধান উপদেষ্টা রেজাউল করিম বলেন, একদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আমার শিক্ষার্থী নুর নবী রবিন চবির শিক্ষার্থীরা টাকার অভাবে খাবার খেতে পারছে না এই মর্মে একটা পোস্ট করে। সাথে সাথে রবিনকে ফোন করি এবং এ রকম শিক্ষার্থীদের খোঁজ নাও। তোমাদের কাজে আমি সব ধরনের সহায়তা করবো। সেই থেকে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু। বর্তমানে উত্তরণ বেশ কয়েকটি প্রকল্প বিস্তৃতি লাভ করেছে।

 

উত্তরণের প্রধান নির্বাহী নুর নবী রবিন বলেন, উত্তরণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে (ফেব্রুয়ারি ২২ – জুন ২৩) মোট সংগ্রহ করা হয়ছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ১৬৭ টাকা। মোট ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ২১৫ টাকা। ফান্ডে অবশিষ্ট আছে ৯১ হাজার ৯৫২ টাকা। এখন পর্যন্ত খাবার ও শিক্ষাবৃত্তিসহ ১ হাজারেরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী উত্তরণের সেবা পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ হাজারেও বেশি শিক্ষার্থী উত্তরণের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত।

 

অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর শহীদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, উত্তরণের স্লোগানে লিখা আছে ‘সংকটে সহযোগিতা’। মাত্র দুটি শব্দ হলেও এর ওজন অনেক বেশি। অনেকের অর্থ থাকলেও মানুষকে সহযোগিতা করতে পারে না, মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ হয় না। এক্ষেত্রে উত্তরণের সদস্যরা ব্যতিক্রম। তারা ছাত্র জীবনেই ঝুঁকি নিয়েছে। নিজের পকেটে কত টাকা আছে সেটা বিবেচনা না করে ক্ষুধার্ত শিক্ষার্থীদের মুখে খাবার তুলে দিয়েছে। এটা অনেক বড় কাজ। উত্তরণে সহায়তা করার কথা আমার ছেলে আমাকে বলেছে। সাথে সাথে আমি বলছি, এটা অনেক বড় কাজ। তাদের কাজে সহায়তা করো। আমি এই সংগঠনের সমৃদ্ধি কামনা করছি।

 

ড. মো. শহীদুল হক বলেন, আমি খুবই আনন্দিত এখানে আসতে পেরে। আমার শিক্ষার্থী ও সহকর্মীদের একান্ত প্রচেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে উত্তরণ। মহান আল্লাহ কুরআনে অনেকবার অসহায় মানুষের বিপদে সহায়তা করার কথা বলেছেন। মানুষের প্রতি এহসান করার কথা বলেছেন। আল্লাহ আরও বলেন, যে মানুষকে সহায়তা করবে আমি তাকে সহায়তা করবো। পাশাপাশি হাদীসে বলা হয়েছে, মসজিদে নববীতে এক মাস ইতিকাফ থাকার চেয়ে একজন দুস্থ মানুষকে সহায়তা করা অনেক উত্তম। উত্তরণ সেই কাজটিই করছে, অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি এই সংগঠনের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।

 

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী পল্লী মজুমদারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী খ. আলী আর রাজী, উত্তরণের সমন্বয়ক মাহমুদুল ইসলাম মারুফ, জাহিদ হাসান প্রমুখ। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উত্তরণ প্রতিষ্ঠা হয় ২০২২ সালে। প্রথমদিকে সংগঠনটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থী অর্থের অভাবে খাবার কিনতে পারে না তাদেরকে খাবার সহায়তা করেছে। বর্তমানে বিস্তৃতি বেড়েছে। খাবারের পাশাপাশি টিউশন প্রদান, আইটি প্রশিক্ষণ, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা, এককালীন শিক্ষাবৃত্তিসহ বেশ কয়েকটি প্রকল্প পরিচালনা করে আসছে।

 

পূর্বকোণ/রায়হান/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট