চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরও অবস্থার কোন পরিবর্তন না হওয়ায় শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন আব্দুল হাকিম জিকু (২৩) নামক এক যুবক।
সোমবার (২৪ জুলাই) দুপুরে উপজেলার পৌরসদরস্থ মহাদেবপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আব্দুল হাকিম জিকু ওই এলাকার মৃত মো. ইসমাইলের ছেলে। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন্ত মজুমদার।
স্থানীয় কাউন্সিলর দিদারুল আলম অ্যাপেলো জানান, দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছিলেন আব্দুল হাকিম জিকু। পরিবারের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছিল। সপ্তাহখানেক আগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়িতে আনা হয়। টানা চিকিৎসার পরও তার অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। তাই শারীরিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে রবিবার রাতের কোন একসময়ে সে নিজ ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। সকাল সাড়ে ১০টায় রুমের দরজা বন্ধ দেখে তার মা একাধিকবার ডাকাডাকি করেন। দীর্ঘক্ষণ ডাকার পরও কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় ঘরের দরজা ভাঙেন এবং ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে তার নিথর মরদেহ ঝুলতে দেখেন। পরে তারা বিষয়টি আমাকে জানালে আমি তাৎক্ষণিক থানা পুলিশকে অবহিত করি। খবর পেয়ে পুলিশ দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে যুবকের লাশটি উদ্ধার করে।
সীতাকুণ্ড থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন্ত মজুমদার বলেন, লাশ উদ্ধারের সময় ঘরে থাকা টেবিলের উপর একটি চিরকুট পান তারা। চিরকুটে লেখা ছিল, ‘পুলিশ ভাই আমি খুব অসুস্থ, যন্ত্রণা আর সহ্য করতে পারছি না। যার কারণে নিজেই চলে গেলাম। আমার পরিবারের উপর যেন কোনো সমস্যা না করেন, তার জন্য আপনাদের বিনীতভাবে বলছি’।
তিনি আরও বলেন, চিরকুটে লেখা যুবকের কষ্টের কথা ও আত্মহত্যার ধরন দেখে যুবকটি স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করেছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির অনুরোধ ও স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি জানান ।
পূর্বকোণ/সৌমিত্র/জেইউ/পারভেজ