চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

জিততে হলে রেকর্ড গড়তে হবে ইতিহাস গড়ার সামর্থ্য আছেতো টাইগারদের ?

হুমায়ুন কবির কিরণ

৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

আজ চতুর্থ দিন, চট্টগ্রাম টেস্টে গেলো তিনদিনে সত্যিকার অর্থে রাজত্ব করেছে অতিথি আফগানরাই। স্কোরবোর্ডও তাই বলছে। এরইমধ্যে তাদের লিড ৩৭৪ রানের। আজ এ লিড নিশ্চিতভাবেই আরও বাড়বে। তিনদিনেই বাংলাদেশ যে লক্ষ্য পেয়েছে তা ঘরের মাঠে তাড়া করা শুধু কঠিন নয়, জিততে হলে গড়তে হবে ইতিহাস। অনেকে টাইগার ক্রিকেটারদের সামর্থ্য নিয়ে অনেক কথাই বলেন, তবে গতকাল সাগরিকায় টাইগার ভক্তরা নিজেরাই প্রশ্ন ছূঁড়ে দিলেন, ইতিহাস গড়ার সামর্থ্য আছেতো টাইগারদের? বাংলাদেশ দল প্রথম ইনিংসে যেমন ব্যাটিং করেছে তাতে জয়ের কথায় প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। কেউ কেউ দুঃসাহস শব্দটাও জুড়ে দিতে পারেন। তবে আফগানিস্তানের কাছে হার এড়াতে এখন উইকেট কামড়ে পড়ে থাকার দুঃসাহস দেখানো ছাড়া আর পথ নেই সাকিব আল হাসানদের। চলমান টেস্টে হাতে আছে আরও দুই দিন। আফগানিস্তানের লিড এরই মধ্যে সাড়ে তিন’শ পার হয়ে গেছে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ভঙ্গুর ব্যাটিং আর ভঙ্গুর উইকেট বিচারে এ রান তাড়া করে জয় নয় টিকে থাকাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

নিজেদের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪১৩ রান তুলেছিল টাইগাররা। বাংলাদেশের মাটিতে এটি চতুর্থ ইনিংসে যেকোনো দলের সর্বোচ্চ রান করারও রেকর্ড। সেটি এক যুগ আগে ঢাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্টে। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সে ম্যাচে ৫২১ রান তাড়া করে হেরেছিল স্বাগতিক দল। আর ঘরের মাঠে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ১০১ রান তাড়া করে জিতেছে বাংলাদেশ, ২০১৪ ঢাকা টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সে ম্যাচে অবশ্য জিম্বাবুয়ে জয়ের জন্য ১০১ রানের বেশি লক্ষ্য দিতে পারেনি। দুই দিন হাতে রেখে ম্যাচটি জিতেছিল স্বাগতিকেরা। চতুর্থ ইনিংসে এত রান তাড়া করে বাংলাদেশ কখনোই জেতেনি। সর্বোচ্চ তাড়া করেছিল ২১৫ রান। তাও দেশের বাইরে। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে চতুর্থ ইনিংসে সফরকারী দলটির সামনে ছিল ২১৫ রান। যা টপকেছিল ৬ উইকেটের খরচায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডও দেশের বাইরে, শ্রীলঙ্কায়। ২০১৭ সালে লঙ্কাভিযানে নিজেদের শততম টেস্টে স্বাগতিকদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৯১ রানের লক্ষ্য ছুঁতে খুইয়েছিল ৬ উইকেট। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করেছিল মিরপুর শের-ই-বাংলায়। ২০১৪ সালে সফরকারী জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১০১ রান ছুঁয়েছিল ৭ উইকেট হারিয়ে। চলমান টেস্টের ভেন্যু জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৩১ রান তুলতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এ মাঠে এটি যেকোনো দলের চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সে টেস্টে ৫১৩ রান তাড়া করতে নেমে হেরেছিল বাংলাদেশ। আর এ মাঠে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩১৭ রান তাড়া করে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। এটি বাংলাদেশের মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে যেকোনো দলের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডও। তৃতীয় দিন শেষেই ৩৭৪ রানের লিড পেয়েছে আফগানিস্তান। অর্থাৎ জিততে হলে ঘরের মাঠে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করার নজিরই গড়তে হবে সাকিবদের। ঘরের মাঠে ড্র করা টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৮৫/৫ তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। ২০০৫ সালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের ৩৭৪ রান তাড়া করতে নেমে চতুর্থ ইনিংসে ১৪২ ওভার ব্যাট করে এ সংগ্রহ গড়েছিল বাংলাদেশ। আর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ড্র করা টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৭১/৩ রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার ৪৬৭ রান তাড়া করতে নেমে চতুর্থ ইনিংসে ৮৪.৪ ওভার ব্যাট করে ম্যাচটা ড্র করেছিল বাংলাদেশ। তবে এ ম্যাচে ড্রয়ের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সাকিব আল হাসানরা হয় নিজেদের ব্যাটে নয়তো আকাশপানে তাকিয়ে সৃষ্টিকর্তার সাহায্য চাইতেই পারেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট