গুগল ও হোয়াটসএপের কল্যাণে দীর্ঘ ৪০ বছর পর অবশেষে খুঁজে পেলেন স্বজনদের এবং নিজের ঘরে ফিরলেন পঞ্চুবাই (৯৫) নামে এক বৃদ্ধা।
পঞ্চুবাইয়ের বাড়ি ভারতের মধ্য প্রদেশে। তিনি সেখান থেকেই নিখোঁজ হন ১৯৭৯-৮০ সালের দিকে। পথ হারিয়ে তিনি মধ্যপ্রদেশের দামোশ জেলার রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এসময় এক ট্রাকচালক তাকে উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। ওই লোকের বাড়ি ছিল উত্তর প্রদেশ। ফলে এরপর থেকে সেখানেই থাকতে থাকেন পঞ্চুবাই, তাদের পরিবারের একজন হয়ে।
সেই ট্রাকচালকের ছেলে ইসরার খানের কাছ থেকে জানা যায়, অচ্চন মৌসিকে (পঞ্চুবাই) মৌমাছি কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করেছিল। কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না বলে তার বাবা ঘরে নিয়ে আসেন।
ওই পরিবারে ঠাঁই পেলেও ভাষার একটা দূরত্ব চার দশক পরেও ছিল। মাসি বলেন মারাঠি। ভাঙা ভাঙা কয়েকটা শব্দ ছাড়া ইসরারের পরিবারের কেউ সে-ভাষা বোঝে না।
ইসরার আরও জানান, বড় হয়ে মাঝেমাঝেই তিনিই পঞ্চুবাইয়ের কাছে পরিবারের কথা জানতে চাইতেন। কিন্তু কিছুই বলতেন না তিনি।
গত ৪ মে মাসির সঙ্গে গল্প করার সময় ইসরার জানতে পারে তার বাড়ি পরশপুর। গুগলে সার্চ করতেই বেরিয়ে এল মহারাষ্ট্রের এক অঞ্চল। তিন দিনের মধ্যে যোগাযোগ হল অভিষেকের সঙ্গে। পরশপুরে একটা দোকান রয়েছে অভিষেকের। ইসরার তাকে জানালেন বৃদ্ধার কথা।
অভিষেকও কিরার গোষ্ঠীর। অভিষেকের কাছেই জানতে পারেন খানজমা নামে এক গ্রাম সেখানে রয়েছে। এতে আরও উত্সাহী হয়ে পড়েন ইসরার। ৭ মে রাতে অভিষেককে মাসির একটি ভিডিয়ো পাঠিয়েছিলেন ইসরার। অভিষেক কিরার গোষ্ঠীর মধ্যে ভিডিয়োটি শেয়ার করেন।
এদিকে, ওই ভিডিও দেখে পৃথ্বী ভাইয়ালাল সিঙ্গানে চিনতে পারেন তার দাদিকে। এরপরই পঞ্চুবাইকে বাড়ি ফেরাতে উদগ্রীব হন নাতি। কিন্তু, লকডাউন বাধা হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত ১৭ জুন দাদিকে মধ্যপ্রদেশ থেকে নাগপুরে নিয়ে আসেন নাতি। জানান তার দাদির পুরো নাম পঞ্চফুলাবাই তেজপালসিং সিঙ্গানে।
পৃথ্বী ভাইয়ালাল জানান, মহারাষ্ট্রের অমরাবতী জেলার অচলপুর তহশিলের খানজমা নগর ছেড়ে পাঁচ দশক আগেই নাগপুরে চলে এসেছেন তারা।
ঠাকুমার বয়সের হিসেব নাতিই দিয়েছেন। এই তিরানব্বইয়েও ঠাকুমাকে শারীরিক ভাবে এমন সুস্থ দেখে আপ্লুত নাতি। খান পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশে কার্পণ্য করেননি। নাতিরও একটাই আক্ষেপ, বাবা আর ঠাকুমা দেখে যেতে পারলেন না!
পূর্বকোণ/এএ