২৮৯ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করল জাতীয় পার্টি
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপ্রাপ্তদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। ৩০০ আসনে লাঙল প্রতীকের চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণার কথা থাকলেও ২৮৯ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে দলটি।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে দলটির বনানী কার্যালয়ে মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করেন।
দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সভাপতিত্বে বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে আলোচনায় বাছাই শেষে বিকেলে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়। রোববার (২৬ নভেম্বর) রাতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার বিকেলে ৪টায় দলের চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টানা চার দিনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন প্রায় ১৮০০ নেতাকর্মী। গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এক হাজার ৭৫২ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এরমধ্যে ২০ নভেম্বর ৫৫৭টি, ২১ নভেম্বর ৬২২টি, ২২ নভেম্বর ৩৩১টি, ২৩ নভেম্বর ২২৭টি এবং ২৪ নভেম্বর ১৫টি ফরম কিনেছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।
রোববার (২৬ নভেম্বর) ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। শনিবারও (২৫ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। এরআগে, সোমবার (২০ নভেম্বর) থেকে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে জাতীয় পার্টি। দলটির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে ফরম বিক্রি শুরু হয়। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) মনোনয়ন ফরম বিক্রির শেষ দিন।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ১৭২ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল জাপা। এর ২৬টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিল না। বরিশাল-৩ আসনে জাপার বিরুদ্ধে নৌকা প্রতীকে ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী। অভাবনীয় ফল করে ওই নির্বাচনে ২২ আসনে জিতে বিএনপিকে ছাপিয়ে সংসদে টানা দ্বিতীয়বারের মতো প্রধান বিরোধী দল হয় জাপা।
জাপার প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বর্জন করলেও রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাপার একাংশ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে যায়। বিএনপিবিহীন ওই নির্বাচনে জাপাকে ৪৮ আসন ছেড়েছিল আওয়ামী লীগ। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২২টিসহ মোট ৩৪টি আসনে জয়ী হয়ে প্রথমবারের মতো প্রধান বিরোধী দল হয় জাপা। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ১৫টি আসনে ছাড় পেয়েও জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জেপি এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে হারেন লাঙলের প্রার্থীরা।
চলতি মাসের ১৫ তারিখে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হবিবুল আউয়াল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।
তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়নের আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত এবং ভোটগ্রহণ ৭ জানুয়ারি।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ভোট হতে হবে। গত ১ নভেম্বর থেকে এবারের নির্বাচনের ক্ষণগণনা শুরু হয়েছে। ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির। সে অনুসারে ১৫ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।
পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ