প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, মানবজাতি ও মানবতা রক্ষায় সব ধরনের যুদ্ধ ও সংঘাতকে বিশ্বের দৃঢ়ভাবে ‘না’ বলতে হবে। আজকের বিশ্বায়নের পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন ও মানবতাকে বাঁচাতে সব যুদ্ধ ও সংঘাতকে দৃঢ়ভাবে ‘না’ বলা অবশ্যই সহজ হবে।
তিনি বলেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে যে কোনো সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমে করা যায়। বাংলাদেশ এবং ভারত এর রোল মডেল। এই দুই দেশ জল এবং স্থল সীমানার দীর্ঘদিনের জটিলতা আলোচনার টেবিলে সমাধান করে তা প্রমাণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বময় শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। গাজায় হতাহতের পাশে যেমন দাঁড়াতে হবে, তেমনই মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে আসা সেদেশের নাগরিকদের তাদের মাতৃভূমিতেও প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জোট জি-টোয়েন্টির ভার্চুয়াল লিডারস সামিটে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য বহুজাতিক উন্নয়ন ব্যাংক গঠন করে অবকাঠামো, জলবায়ু এবং প্রযুক্তি খাতে সহায়তায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর এই জোটের এগিয়ে আসাকে স্বাগত জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। ৩৫ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নানা সংকট মোকাবিলা করে এগিয়ে যাচ্ছে।
সরকারপ্রধান বলেন, এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ আমাদের সবাইকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুন্দর আবাস হিসেবে পৃথিবীকে গড়ে তোলার প্রেরণা জোগাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ইউরোপে বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতির সঙ্গে সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বিশ্বজুড়ে মানবিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় নামিয়েছে এবং এ দুর্দশা চলছেই।
তিনি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, দেড়মাস ধরে আমরা ফিলিস্তিনে নির্দয় গণহত্যা দেখছি, যেখানে এরই মধ্যে হাজার হাজার নারী-পুরুষ নিহত হয়েছেন এবং দুঃখজনকভাবে পাঁচ হাজারেরও নিষ্পাপ শিশু প্রাণ হারিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড গোটা বিশ্বকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে, যা বিশ্বকে আরও বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এতে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আজকের সম্মেলনে উপস্থিত বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা এক হয়ে এই মুহূর্তে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি তুলুন। একই সঙ্গে নির্মমতার শিকার ভুক্তভোগীদের কাছে যেন অবিলম্বে নির্বিঘ্নে মানবিক সহায়তা সরবরাহ হয়, সেই ব্যবস্থাও করতে হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে সামিটে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্বনেতারা অংশ নেন।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ