চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আন্দোলন তীব্রতা পায় বায়ান্নর ৪ ফেব্রুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ৭:৫৩ অপরাহ্ণ

১৯৫২ সালের ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারি ঢাকায় ছিল পাকিস্তান মুসলিম লীগের কাউন্সিল উপলক্ষে ঢাকায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন।

 

২৭ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে পূর্ববঙ্গের প্রধানমন্ত্রী নুরুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় পাকিস্তানের গুণকীর্তন করে তিনি ঘোষণা করেন, ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। পাকিস্তানকে আমরা ইসলামি রাষ্ট্ররূপে গঠন করতে যাচ্ছি।’

 

কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দোহাই দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রদেশের ভাষা কী হবে তা প্রদেশবাসীই স্থির করবেন, কিন্তু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। একাধিক রাষ্ট্রভাষা থাকলে কোনো রাষ্ট্র শক্তিশালী হতে পারে না।’

 

জনসভায় তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ২৯ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রর এর প্রতিবাদ সভা করে। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি আবারও ঢাকা এসে এক সংবাদ সম্মেলনে খাজা নাজিমউদ্দিন পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নাকচ করে দেন। পাকিস্তানের নিরাপত্তা ও অখণ্ডতার অজুহাত দেখিয়ে বলেন, আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই যে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু হতে চলেছে, অন্য কোনো ভাষা নয়। তবে এটা যথাসময়ে হবে।

 

এ ব্যাপারে যারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে তারা পাকিস্তানের দুশমন। তার এমন বক্তব্যে বারুদের মতো বিষ্ফোরিত হয়ে প্রচণ্ড রূপ ধারণ করে আন্দোলন। ১৯৫২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার ছাত্ররা ঢাকা শহরে ধর্মঘট ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে। কর্মসূচিটি শহরভিত্তিক হলেও দেশের বিভিন্ন স্থানেই দিবসটি পালিত হয়। নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ আরও অনেক শহরে সাফল্যের সঙ্গে হরতাল পালিত হয়।

 

শহরের রাজপথের স্লোগান গর্জে ওঠে মেঠো পথেও। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশ জুড়ে। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি খাজা নাজিমুদ্দিনের বক্তৃতা ছিল একটি স্ফুলিঙ্গ, যা ৪ ফেব্রুয়ারি একটি দাবানলের মুখে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো বিস্ফোরিত হয়েছিল। আর তা প্রচণ্ড রূপ ধারণ করেছিল ২১ ফেব্রুয়ারিতে।

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট