চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আসছে ছয় লাখ কোটি টাকার নতুন বাজেট !

শিবুকান্তি দাশ, ঢাকা অফিস

৭ জানুয়ারি, ২০২১ | ১:০৬ অপরাহ্ণ

আসছে বাজেটের আকার ধরা হয়েছে প্রায় ছয় লাখ কোটি টাকা। যা গত বছরের বাজেট থেকে ২৫ হাজার কোটি টাকা বেশি। মহামারী করোনার কারণে অর্থনীতির যা ক্ষতি হয়েছে আসছে বাজেটে সেসব দিক বিবেচনা করা হবে।

জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাাবিত বাজেট তৈরির কাজ শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের সভা হয়েছে। মহামারির কারণে বাজেটেও বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে ব্যয় কমিয়ে নয়, বরং নতুন বাজেটে আয়ের বিকল্প পথ বের করার প্রতি জোর দিচ্ছে সরকার। অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এ সব তথ্য। ওই সভায় সিঙ্গাপুর থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম-এ সভাপতিত্ব করেছেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। সভায় আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে বিভিন্ন বিষয় ঠিক করা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী জানান, ‘মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সরকারের নতুন বাজেটে দিক নির্দেশনাসহ কর্মসূচি ও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হবে। নতুন বাজেটে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার প্রস্তাবনাও থাকবে। মোটকথা, সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুযায়ীই প্রণীত হবে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের নতুন বাজেট।’  জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার হতে পারে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৩১৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের তুলনায় যা ২৫ হাজার ৩১৩ কোটি টাকা বেশি। প্রস্তাবিত নতুন বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের জন্য ডিজিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। নতুন বাজেটে আগের মতো ঘাটতি কিছুটা বাড়িয়ে ধরা হয়েছে- ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যেই আটকে রাখার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের জুনের প্রথম সপ্তাহের প্রথম বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে নতুন বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। তবে উপস্থাপনের প্রক্রিয়া কী হবে তা এখনও চূড়ান্ত করেনি সরকার।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৯টি। এগুলো হচ্ছে- বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সরকারের অগ্রধিকার খাতগুলোতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা; কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলোর সফল বাস্তবায়ন; কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যখাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ, প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া; অধিক খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সেচ ও বীজ প্রণোদনা, কৃষি পুনর্বাসন, সারে ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রাখা; ব্যাপক কর্মসৃজন ও পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ; সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা সম্প্রসারণ : গৃহহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহনির্মাণ (মুজিববর্ষের প্রধান কার্যক্রম) কার্যক্রম বাস্তবায়ন; নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা চালু রাখা এবং শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ সার্বিক মানবসম্পদ উন্নয়ন।

সূত্র জানিয়েছে, করোনা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অগ্রাধিকার দেওয়া খাতগুলোর মধ্যে আছে- স্বাস্থ্য, বিনিয়োগ, উৎপাদন, কর্মসংস্থান, মানবসম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন ও খাদ্যনিরাপত্তা জোরদার কর্মসূচি। ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের প্রায় অর্ধেক অর্থাৎ ২ লাখ ৬৫ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, সড়ক পরিবহন মহাসড়ক বিভাগ, স্বাস্থ্যবিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ও রেলপথ মন্ত্রণালয়। এই দশ খাতে আগামী বাজেটেও থাকছে সর্বোচ্চ বরাদ্দ।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট