চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

পোশাকে বিজয়ের ছোঁয়া, নেই ক্রেতা

মরিয়ম জাহান মুুন্নী

১১ ডিসেম্বর, ২০২০ | ৮:০১ অপরাহ্ণ

‘এক সাগরের রক্তের বিনিময় বাংলার স্বাধীনতা আনলো যাঁরা আমরা তোমাদের ভুলবো না’। এমন বিখ্যাত দেশাত্ববোধক গানের লাইন এবং ‘অ’, ‘আ’, ‘ক’, ‘খ’ বাংলা বর্ণমালায় সেজেছে বিজয়ের পোশাক। চলছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। আর কয়েক দিন পরেই পালিত হবে বাঙালির মুক্তির দিবস ‘১৬ই ডিসেম্বর’। এরমধ্যে ফ্যাশন হাউজগুলো সেজে উঠেছে বিজয় দিবসের নানান ডিজাইনের পোশাক নিয়ে। কিন্তু নগরীর বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ ঘুরে দেখা যায়, একবারে ভিন্ন চিত্র।

হাউজগুলো বিজয়ের পোশাকে সাজলেও নেই ক্রেতার দেখা। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে এবারের বিজয় দিবসের ফ্যাশনেও। ফ্যাশন হাইজগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানায় করোনার প্রভাব পড়েছে এবারের বিজয় দিবসের ব্যবসায়। অথচ অন্যান্য বছর দুই ঈদ ছাড়া বাঙালির বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে শেষের এ সময়গুলো একটু বসার সময় পেতাম না আমরা। বাঙালি খাবারে যেমন রসিক, পোশাকেও কম নয়। দিবস ভিত্তিক পোশাক পরতে পছন্দ করে তারা। তার উপর ভিত্তি করেই ফ্যাশন হাউজগুলোতে আসে নানা ডিজাইনের পোশাক। তেমনি থাকে ফ্যাশন সচেতন ক্রেতার ভীড়ও। কিন্তু এবারে তা একেবারেই নেই।

সারাদিনে দুই-তিন জন ক্রেতা আসে আর এদিক ওদিক ঘুরে চলে যায়। এমনওদির যায় একটা পোশাকও বিক্রি হচ্ছে না। গতকাল সরেজমিনে নগরীর আফমি প্লাজার দেশীদশ, দুই নম্বর গেট এলাকায় আড়ং, দেশাল, শৈলী ও শৈল্পিক বিভিন্ন শোরুম ঘুরে দেখা যায় লাল-সবুজ রংয়ের সুতির পোশাকগুলোতে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও শাপলা, দোয়েলের নকশায় করা নানান ডিজাইনের পোশাক। এসব পোশাকে বাংলায় বড়-ছোট অক্ষরে লেখা রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের চুম্বুক অংশ ও দেশাত্ববোধক গান। রয়েছে কিছু পোশাকে বঙ্গবন্ধুর ছবি আঁকা। এমন ডিজাইনগুলো নারী-পুরুষ ও শিশু সব বয়সি মানুষের পোশাকেই দেখা যায়। পোশাকে বিজয়ের এমন ছোঁয়া নিয়ে শুরু হয়েছে নগরীর সবগুলো পোশাক হাউজের প্রদর্শনী। হাউজগুলোর মধ্যে রয়েছে শাড়ি, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, থ্রিপিস, টি-শার্ট ও শার্ট। যুগলদের বিজয় পোশাক ও সালোয়ার কামিজ আর ফতুয়ার কম্বিনেশন, আরো আছে ফ্যামিলি পেকেজ। পোশাকগুলো মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয়েছে ব্লক, স্প্রে ব্লক, ফেব্রিক চুনরি, স্ক্রিনপ্রিন্ট ও কটন।

চট্টগ্রাম শাখার দেশীদশের এডমিন তারিকুল ইসলাম বলেন, এখন ক্রেতারা যেকোনো উৎসবে পোশাক নিয়ে থাকে। কিন্তু এবারে ক্রেতা নেই বললেই চলে। তবে করোনার লকডাউন শেষে দুই একজন করে ক্রেতা আসছে। ক্রেতা না আসলেও দেশীদশে বিজয়ের অসাধারণ ডিজাইনের পোশাক এসেছে।

বাঙালির আছে ঐতিহ্যবাহী এক পোশাকের সমাহার। বাঙালির পোশাকে বহুকাল আগেই যোগ হয়েছে নানা বৈচিত্রতা। সময়ের সাথে সেখানে যোগ হয়েছে আরো নতুনত্ব। মানুষ এখন শুধু প্রয়োজনীয় পোশাক-পরিচ্ছদ কেনাকাটার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ফ্যাশন সচেতন মানুষদের মূল্যবোধে যোগ হয়েছে বাঙালির নানা দিবস ও উৎসবের রং। তাই উৎসব পার্বণ ছাড়াও দিবসভিত্তিক ফ্যাশন আকর্ষণ করে ক্রেতাদের। ফলে ফ্যাশন হাউজগুলোও তাদের পোশাকে যোগ করেছে বিজয়ের ছৌঁয়া। কিন্তু এসব হাউসগুলো বিজয় দিবসের নানান ডিজাইন নিয়ে এরমধ্যে উপস্থিত হলেও বাড়েনি বিক্রি।

এছাড়া আড়ং, রঙ, নিপুণ, পিনন দেশীয় হাউজগুলোতে শাড়ি ৭শ’-৪ হাজার টাকা, সালোয়ার-কামিজ ১২শ’-৪ হাজার টাকা, পাঞ্জাবি ৯৫০-১৫শ’ টাকা। শার্টের দাম ৫৫০-৯৫০ টাকা, টি-শার্ট ৪৫০-৭৫০ টাকা আর শিশুদের পোশাক ৩৫০-৯৫০ টাকা। ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে পোশাকগুলোর উপর ১০ থেকে ৬০ শতাশং পর্যন্ত চলছে ডিসকাউন্ট।

 

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট