গেল কয়েক মাস ধরেই বাজারে সরবরাহ কম ভোজ্যতেলের। পণ্যটির দাম নিয়ে আমদানিকারক ও সরকারের দীর্ঘ দর কষাকষির পর মঙ্গলবার লিটার প্রতি এক লাফে ১৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে দাম। এরপরও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি পণ্যটির সরবরাহ। এখনও কিছুটা সংকট রয়ে গেছে বোতলজাত সয়াবিনের।

গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর অক্সিজেন, দুই নম্বর গেট, চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাজীর দেউড়িসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য। দাম বৃদ্ধির পরপর ব্যবসায়ীরা সরবরাহ বৃদ্ধির আশা করলেও তিনদিনেও ভোজ্য তেলের নতুন সরবরাহ পাননি তারা। তবে পুরনো তেল নতুন দামে (বর্ধিত) বিক্রি করতে দেখা গেছে বাজারে। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৯০, দুই লিটার ৩৭৫ এবং ৫ লিটার ৯২১ টাকায় বিক্রি করছেন তারা।

নগরীর অক্সিজেন এলাকার হাজী সিরাজ স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, দাম বৃদ্ধির পর তিনদিন হয়ে গেলেও এখনও নতুন সরবরাহ পাইনি। পুরনো তেল যা ছিল সব বিক্রি হয়ে গেছে। এখন এক লিটারের বোতলজাত কোনো তেল আমাদের কাছে নেই। তবে মঙ্গলবার মেঘনা গ্রুপের একজন বিক্রয় কর্মী কিছু অর্ডার নিয়েছিল, কিন্তু এখনও সরবরাহ দেয়নি। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের এসআর আসেনি এখনও। এমনকি ফোনও রিসিভ করেনি।

অনেকটা একই কথা বললেন নগরীর দুই নম্বর গেট কর্ণফুলী কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ। তিনি বলেন, এখনও কোনো এসআর অর্ডার নিতে আসেনি। নতুন তেল এখনও সরবরাহ দেয়নি। তবে আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে আসবে। কারণ এখন যেহেতু দাম বেড়েছে, আমদানিকারকরা আর আটকে রাখবে না।

চড়া দাম সবজির:

গ্রীষ্মের শুরুতেই বেশ চড়া দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে বন্দরনগরীতে। ঝিঙে, করলা, কাঁকরোল, লতি, বরবটিসহ অধিকাংশ সবজির দামই ৮০ টাকার বেশি।

গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ১৫টি সবজি দেখা গেছে বাজারে। এরমধ্যে ৮ সবজিই বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার বেশি দামে। ঝিঙে ৯০, বরবটি ৮০, করলা ৯০, কাঁকরোল ১৩০, পটল ৮০, লতি ৮০, কাঁচা মরিচ ৮০ এবং শিম ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে টমেটো ৪০, মিষ্টি কুমড়া ৫০, লাউ ৬০, শসা ৬০, চিচিঙ্গা ৭০ এবং আলু ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১৫ টাকা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। নগরে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে দেশে সবচেয়ে সহজলভ্য এই আমিষ পণ্যটি। এর বাইরে দেশি মুরগি ৬২০ টাকা এবং সোনালি ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চড়া দাম গরুর মাংসের। নগরে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস।

মাছের মধ্যে পাবদা ৪০০, ছুরি মাছ ৪০০-৫০০, স্যালমন ৭০০, পোয়া ৪৫০, রূপচাঁদা ৮০০-১০০০, লইট্টা ২২০, রুই ৩২০-৩৮০, কাতল ৩৮০, মৃগেল ২৬০, নারকেলি ২৮০, বেলে ২৮০ এবং টুনাফিশ ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

পূর্বকোণ/ইব