কাপ্তাই রামপাড়ার শীলছড়ি এলাকার বাসিন্দা এনামুল হক বাচ্চু। ২০২০ সালে ২০০ শতক জায়গা নিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু করেন বিভিন্ন ফলদ গাছের চাষাবাদ। বর্তমানে তার ফলদ বাগানে রয়েছে বরই, আম, লিচু ও মালটা গাছ। মওসুম আসলেই এসব গাছে ধরছে সুমিষ্ট ফল। চলমান বরই মওসুমে তার বাগানে ধরেছে বলসুন্দরি, মিস ইন্ডিয়া ও কাশ্মিরি বরই। বর্তমানে তার ১২০ শতক জায়গায় তিনশত বরই গাছ রয়েছে। এর মধ্যে ফল দিচ্ছে ২০ শতক বাগানের ৫০টি গাছ। অবশিষ্ট একশ শতকে এ বছর ফল আসলেও গাছ আরো পরিপক্ক হওয়ার জন্য বরই ছিঁড়ে ফেলা হয়। শুধু পরীক্ষামূলকভাবে দেখার জন্য কিছু বরই রেখে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে তার ২০ শতক বাগানের বরই বিক্রি করে আসছেন চাষী এনামুল হক বাচ্চু। এ বছরও তিনি এ বাগান থেকে পাইকারি বাজারে অর্ধ লক্ষাধিক টাকার বরই বিক্রি করেছেন।
দৈনিক পূর্বকোণকে তিনি বলেন, ‘এ বছর বৈরি আবহাওয়ার কারণে ফলন কম হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এ বছর কমপক্ষে এক লাখ টাকার বরই বিক্রি হতো। কিন্তু অনুকূল না থাকায় ফলন কম হয়েছে। ফলে অর্ধ লক্ষাধিক টাকার বরই বিক্রি করেছি।’ কাপ্তাইতে শুধু এনামুল হক বাচ্চু নয়, আরো অসংখ্য চাষী গত কয়েক বছর ধরে মওসুমি ফলের চাষাবাদ করছেন। একজনের দেখাদেখিতে আরেকজন এ চাষে এগিয়ে আসছেন। এভাবে বাড়ছে ফলদ গাছের বাগান। তাতে শুরু হয়েছে পাহাড়ে বরই চাষের বিপ্লব।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার পাহাড়ে প্রতিবছরই বাড়ছে বড়ই (কুল) চাষ। তাতে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার পাহাড়ে গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) বড়ই চাষ হয়েছে দুই হাজার ৪৯৬ হেক্টর জমিতে। এতে উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৫৪৬ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বেশি বড়ই চাষ হয় বান্দরবান জেলায়। এ জেলায় এক হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে বড়ই উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৬ মেট্রিক টন। দ্বিতীয় অবস্থানে রাঙামাটি জেলা। এ জেলায় ৮০০ হেক্টর জমিতে বড়ই উৎপাদন হয়েছে ৮ হাজার মেট্রিক টন। অপরদিকে খাগড়াছড়ি উপজেলায় ২১৬ হেক্টর জমিতে বড়ই উৎপাদন হয়েছে এক হাজার ৫৪০ মেট্রিক টন।
পূর্বকোণ/পিআর