চট্টগ্রাম শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

নিলামের ৩টি লটে কোন দরপত্রই জমা পড়েনি

২৩ লটের ই-অকশনে অংশ নিয়েছে ১২জন !

নিজস্ব প্রতিবেদক

৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১২:০৮ অপরাহ্ণ

প্রায় এক বছর বিরতির পর গত মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম কাস্টমসে অনুষ্ঠিত হলো ই-অকশন। তবে সেই ই-অকশনের ২৩টি লটের মধ্যে ৬, ১৫ ও ১৩ নম্বর লটে কোন দর জমাই পড়েনি। বাকি ২০টি লটে অংশগ্রহণ করেছেন মাত্র ১২জন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তারা সব মিলিয়ে মোট ৪৯টি দর জমা দেন। এরমধ্যে নাসির ব্রাদার্স ও মো. রুবেল উভয়ই ৯টি লটে দর দিয়েছেন। মোহাম্মদ আকবর ৭টি লটে, মো. নাসির উদ্দিন ছোটন ৬টি লটে, মোহাম্মদ আবদুল আলিম ৫টিতে, সাজ্জাদ উল মোহাম্মদ চৌধুরী ৫টি লটে দর জমা দিয়েছেন। এছাড়া ২টি লটে দর জমা দিয়েছেন হোসাইন মোহাম্মদ জুবায়ের, শাহ আমানত ট্রেডিং ও মো. শাহজাহান। ১টি লটে দর জমা দেন জান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও মো. আহসানুল হক। এবারের ই-অকশনের ২৩টি লটে বিক্রিযোগ্য পণ্য হিসেবে ছিল ইন্ট্রাকো ব্রান্ডের ৮২৬ পিস এলপিজি খালি সিলিন্ডার, প্রায় ৩টন এলাস্টিক ব্যান্ড, প্রায় ১২ হাজার ঢেউতোলা প্লাস্টিক শিট, ১০২ জোড়া কোরিয়ান জুতা, ৬৬ হাজার পিস এমব্রয়ডারিসহ রেডিমেড গার্মেন্টস পুরুষদের পোলো শার্ট, প্রায় ১৬ হাজার পিস পাথরের টাইলস, ৩শ পিস প্লাস্টিক ব্লক (কংক্রিট পিভিসি ব্লক প্যালেট), ১৭ হাজার পিস পুরুষদের শর্ট এবং শর্ট হাতা রাউন্ড নেক টি-শার্ট, তিয়ানশি লিপিড মেটাবলিক চা, সেল রিজুভেনেশন ক্যাপসুল, গ্রেপ এক্সট্র্যাক্ট ক্যাপসুল, কাচের পুঁতি, ৬০৪ রোল ফেব্রিক্স, লোম কাপড়, প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার ও টপ হ্যাঙ্গার, কটন ড্রকর্ড, সুতি কাপড়, নিট কাপড় ও ওভেন কাপড়, ব্র্যান্ড নিউ ক্যাপিটাল মেশিনারি, পুরুষদের পোলার ফ্লিস জ্যাকেট ইত্যাদি।

 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম ব্যবস্থাকে যুগোপুযোগী করতে তিন বছর আগে ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম কাস্টমসে ঘটা করে চালু হয়েছিল অনলাইন ভিত্তিক ই-অকশন কার্যক্রম। অথচ উদ্বোধনের পর থেকে গত তিন বছরে ই-অকশন হয়েছে মাত্র ৬টি। এছাড়া গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বরের পর এক বছর বিরতি দিয়ে চলতি সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখ অনুষ্ঠিত হলো ১টি ই-অকশন।

 

চট্টগ্রাম কাস্টমসে প্রায় প্রতি মাসেই ২/৩টি সাধারণ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে গতানুগতিক কাগজের নিলামের দরপত্র ক্রয় করে হাতে লেখা সেই নিলামের ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হয়। অথচ অনলাইন ভিত্তিক যে সুদূর প্রসারী চিন্তা করে ই-অকশন চালু করা হয়েছিল তা শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। চট্টগ্রাম কাস্টমসের ই-অকশন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, উদ্বোধনের পর ২০২০ সালের ২৮ অক্টোবরের প্রথম ই-অকশনের লট ছিল ১৬টি। সেই ১৬ লটের মধ্যে ছিল বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিকস, স্ক্র্যাপ, প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার, খেজুর, আদা, সোডা অ্যাশ, আয়রন পাইপ ইত্যাদি। পরবর্তি ই-অকশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি। সেই নিলামে ২০ লটের সবগুলোতেই ছিল পেঁয়াজ।

 

এর পরের তিনটি ই-অকশনই অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিলাস বহুল কার্নেট গাড়ির। ২০২১ নভেম্বরের ৪ তারিখের ই-অকশন ১১২টি লটে ১১২টি বিলাস বহুল কার্নেট গাড়ির নিলামে তোলা হয়েছিল। এর পরে গত বছরের (২০২২) ১৩ জুন তারিখে অনুষ্ঠিত কার্নেট গাড়ির ই-নিলামে ১০৮টি গাড়ি রাখা হয়েছিল। গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত কার্নেট গাড়ির ই-অকশনে ছিল ৭৮ টি গাড়ি। এরপর একবছর বিরতি দিয়ে আবার এই সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হলো আরেকটি ই-অকশন। প্রসঙ্গত, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে খালাস না নিলে আমদানিকারককে নোটিশ দেয় কাস্টম কর্তৃপক্ষ। এর ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য খালাস না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টম। এ ছাড়া মিথ্যা ঘোষণা এবং ঘোষণার বেশি আনা জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়। আবার মামলাসহ নানা জটিলতায় বন্দর ইয়ার্ডে বাড়ে কনটেইনারের সারি। তৈরি হয় কনটেইনার জট। দিনের পর দিন কনটেইনার পড়ে থাকলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ চার্জ পায় না।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট