চট্টগ্রাম শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

চট্টগ্রামে নির্মাণ হচ্ছে না সার্ভিল্যান্স চেকপোস্ট ও ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার

সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্প সংশোধন

মোহাম্মদ আলী

৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ | ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ

সামুুদ্রিক মৎস্য খাতে উন্নয়নে চট্টগ্রামে দুইটি মেরিন সার্ভিল্যান্স চেকপোস্ট ও চারটি ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার নির্মাণের অনুমোদন ছিল। কিন্তু মাঠে গড়ানো প্রকল্পটি পুনরায় সংশোধনের কারণে চট্টগ্রামে নির্মাণ করা হচ্ছে না কোন মেরিন সার্ভিল্যান্স চেকপোস্ট। একই সাথে চট্টগ্রামে চারটি ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার নির্মাণের অনুমোদন থাকলেও ভূমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে এগুলোও আপাতত তৈরি করা হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, নিরূপণ, আহরণ, বিপণন, নিয়ন্ত্রণ, নজরদারিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, গবেষণা, জেলেদের জীবনমান উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, উপকূলীয় অঞ্চলের মৎস্য আহরণ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পটি গ্রহণ করে। বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৯০০ কোটি টাকা।

মূলত মেরিন সার্ভিল্যান্স চেকপোস্টের মাধ্যমে যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক ফিশিং বোটগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বিশেষ করে সাগরে ফিশিং করতে যাওয়ার প্রাক্কালে ফিশিং বোটগুলোর রেজিস্টেশন, লাইসেন্স, অনুমোদিত জাল ব্যবহার, জেলেরা জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম ব্যবহার করছে কিনা যাবতীয় মনিটরিং করা হবে। পাশাপাশি চেকপোস্টে প্রতিটি ফিশিং বোটকে একটি করে ডিভাইস দেওয়া হবে। এটির মাধ্যমে বোটগুলোর নিয়ন্ত্রণ, জরুরি সতর্কতা ও সুনামি সতর্কতা সংকেত পাঠানো এবং সাগরে জলদস্যুর হামলা কিংবা অন্য কোন বিপদে সহযোগিতা দেওয়া সম্ভব হবে।

ফিশিং বোটগুলো সাগরে মৎস্য আহরণশেষে ফেরার পথে পুনরায় চেকপোস্টে আহরণকৃত মাছের মনিটরিং করা হবে। এছাড়া ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টারে ফিশিং বোট থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে আহরণকৃত মাছ লোড-আনলোড করা হবে। অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও প্রতিটি ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টারে বরফকলের ব্যবস্থা থাকবে।

সূত্র জানায়, সারাদেশে প্রতিবছর সামুদ্রিক মৎস্য আহরিত হয় প্রায় ৬ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন। এর ৮৪ শতাংশ মৎস্য আহরিত হয় ৬৮ হাজার ফিশিং বোটের মাধ্যমে। কিন্তু আহরণ ও নিয়ন্ত্রণের কোন তথ্য না থাকায় নানা সমস্যা ছাড়াও সরকার প্রতিবছর বিপুল পরিমাণের রাজস্ব হারাচ্ছে। তাই এ খাতে উন্নয়নের জন্য সরকার দেশের ১৬টি উপকূলীয় জেলার ৭৫ উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, প্রকল্পের অধীনে শুরুতে সারাদেশের ১৬ জেলার উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি সার্ভিল্যান্স চেকপোস্ট নির্মাণের পরিকল্পনা ছিল। এর মধ্যে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও বাঁশখালীতে একটি করে দুইটি সার্ভিল্যান্স চেকপোস্ট নির্মাণের অনুমোদন ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এ প্রকল্পের পিপিপি সংশোধন করে সারাদেশে নির্মাণ করা হচ্ছে মাত্র তিনটি। কক্সবাজারের টেকনাফ, নোয়াখালীর হাতিয়া ও লক্ষ্মীপুরের কমলগঞ্জে এসব সার্ভিল্যান্স চেকপোস্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। তাই চট্টগ্রামে আপাতত কোন সার্ভিল্যান্স চেক পোস্ট নির্মাণ করা হচ্ছে না। একই প্রকল্পের মাধ্যমে সারাদেশে ১৬টি ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টারের মধ্যে চট্টগ্রামে তৈরি করার অনুমোদন ছিল চারটি। এরমধ্যে দ্বীপ উপজেলা পতেঙ্গায় একটি, সীতাকু-ের কুমিরায় একটি, বাঁশখালীতে একটি ও দক্ষিণ কাট্টলীতে একটি। কিন্তু ভূমি সংক্রান্ত জটিলতায় এসব ফিশ ল্যান্ডিং সেন্টার নির্মাণের প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। তবে প্রকল্পে অধীনে মিরসরাইয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি ডিজিজ ল্যাব। যন্ত্রপাতি ও জনবল পাওয়ার পর এটি চালু করা হবে বলে জানা গেছে।

উপ-প্রকল্প পরিচালক ফারহানা লাভলী দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন, গবেষণা, মনিটরিংসহ যাবতীয় কর্মকা- পরিচালনার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বিশাল এই প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এটি বাস্তবায়ন করছে মৎস্য অধিদপ্তর। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। দেশের উপকূলীয় ১৬টি জেলার ৭৫ উপজেলার ৭৫০টি ইউনিয়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে।’

পূর্বকোণ/আরডি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট