২০২০ সালের শুরুর দিকেই বিকল হয়ে যায় চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের ইটিটি মেশিন। প্রায় ৩ বছর হার্টের যোগ্যতার পরিমাপক এক্সারসাইজ টলারেন্স টেস্ট বা ইটিটি মেশিনটি বিকল থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন রোগীরা। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় ওষুধাগার বা সিএমএসডি থেকে হাসপাতালের জন্য পাঠানো হয় নতুন ইটিটি মেশিন। যা স্থাপনের পর পুনরায় সেবা পেতে শুরু করেছেন রোগীরা।
শুধুমাত্র হৃদরোগের গুরুত্বপূর্ণ এই ইটিটি মেশিনই নয়, বিদায়ী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ইটিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের শতাধিক যন্ত্রপাতি স্থাপন হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে। এসবের মধ্যে বেশ কিছু নতুন যন্ত্র যুক্ত হয়, যা অতীতে ছিল না এ হাসপাতালে। ফলে নতুন সেবা পাওয়ার সুযোগও মিলেছে সাধারণ রোগীদের।
চমেক হাসপাতালের তথ্য অনুসারে, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে সর্বমোট ৩০ কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি যুক্ত হয় হাসপাতালে। এসব যন্ত্রপাতি যুক্তরাজ্য, জাপান, ইতালি, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, চীন, তুর্কি, জার্মানি, ইন্ডিয়া, কোরিয়া থেকে আনা হয়। এসবের উল্লেখযোগ্য যন্ত্রপাতির মধ্যে ৫ কোটি ৮২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ মূল্যের শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য আইসিইউ ভেন্টিলেটর, ১ কোটি ২ লাখ ৯৭ হাজার ৩৮৫ টাকার পেশেন্ট মনিটর, ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা দামের ৪৫টি হাইফ্লো ন্যাজেল ক্যানোলা, ১ কোটি ২ লাখ ৩ হাজার ৭২৫ টাকা দামের দুটি সার্জিক্যাল ল্যাপারোস্কপি মেশিন, ৬৫ লাখ ৬২ হাজার ১৭৮ টাকা মূল্যের ভিডিও এন্ডোস্কোপি মেশিন, ২৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা দামের ইটিটি মেশিন, ৩৫ লাখ ১৯ হাজার ২৪১ টাকা মূল্যের ইকোকার্ডিওগ্রাম কালারডপলার মেশিন, ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের মস্তিস্কের অস্ত্রোপচারের ক্রেন ইউ টম মেশিন, ২ কোটি টাকা মূল্যের ১০টি আইসিইউ ও দুটি লেভার টেবিল যুক্ত হয়।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সিনিয়র স্টোর অফিসার ডা. হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এক অর্থ বছরেই প্রায় ৩০ কোটি টাকার যন্ত্র এসেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় ওষুধাগার থেকে। যা শুরু থেকেই সংশ্লিষ্ট বিভাগে স্থাপনের জন্য বিতরণ করা হয়। ইতোমধ্যে প্রায় সবগুলো যন্ত্রপাতিই চালু হয়েছে। কিছু চালুর অপেক্ষমান।’
এদিকে, নতুন নতুন যন্ত্রপাতি যুক্ত হওয়ার ফলে রোগীদের সেবা কার্যক্রম সহজ হয়ে ওঠেছে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘কিছু যন্ত্র অতীতে যুক্তই ছিল না, তবে অনেক প্রচেষ্টার পর তা স্থাপন করা হয়েছে। আবার কিছু যন্ত্রপাতি দীর্ঘদিন ধরেই বিকল ছিল, তাও চালু করা হয়েছে। শুধু বিগত অর্থ বছরেই বিবেচনায় নয়, সামনে আরও আধুনিক যন্ত্রপাতি যুক্ত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই নতুন নতুন যন্ত্রপাতি যুক্ত হবে এ হাসপাতালে। ফলে রোগীদের সেবাদান আরও সহজ হবে।’
পূর্বকোণ/মাহমুদ