আজ থেকে ফাঁকা হতে শুরু করবে কোলাহলমুখর নগরী। পরিবারের সাথে ঈদ করতে শেকড়ের টানে শহর ছাড়বে মানুষ। ঈদ উল আজহার সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে আজ (মঙ্গলবার) থেকে। টানা পাঁচদিনের ছুটির ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে দেশ। আগামী ২৯ জুন পবিত্র ঈদ উল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল (সোমবার) অফিস শেষ করে অনেকেই গ্রামের বাড়িতে যাত্রা শুরু করেছেন। বিশেষ করে গার্মেন্টস কারখানাগুলোর কিছু কিছু গতকাল থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে। সেই সুবাদে গার্মেন্টস কর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
এদিকে, ঈদ আসলেই ইচ্ছেমতো বাড়তি ভাড়া আদায় করে বাস মালিকরা। প্রতিবছর ঈদের আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করে বাড়তি ভাড়া না নেয়ার অঙ্গীকার করলেও বাস মালিকরা তা কখনো বাস্তবায়ন করে না। কথা ছিল প্রতিটি কাউন্টারে বাস ভাড়ার তালিকা দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখা হবে। কিন্তু তা করা হয়নি। গতকাল (সোমবার) বিকেলে নগরীর প্রবেশমুখ অলংকার, শাহ আমানত সেতুর গোলচত্বর, অক্সিজেন এলাকা ঘুরে দেখা যায় ঘরমুখো মানুষের ভিড়। শাহ আমানত সেতুর বশরুজ্জামান চত্বরে দেখা যায় যানবাহনের ভিড়। তবে ট্রাফিক পুলিশ চেষ্টা করছে চত্বরটি যানজটমুক্ত রাখতে। ট্রাফিক বিভাগ সূত্র জানায়, বশরুজ্জামান চত্বর থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখী বেশ কিছু যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে। কিন্তু সেখানে কোন টার্মিনাল কিংবা পার্কিং ব্যবস্থা নেই। দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখী বাস ছাড়াও ওই এলাকায় নগরীতে চলাচলকারী বেশ কিছু রুটের বাস, মিনিবাস ও অটো টেম্পোর স্টার্টিং ও এন্ডিং পয়েন্ট রয়েছে। যার কারণে ব্যাপক সংখ্যক যানবাহন অবস্থান করে সেখানে।
চকরিয়ার খালেদ হোসাইন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শাহ আমানত গোলচত্বরে অপেক্ষা করছিলেন গাড়ির জন্য। বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত খালেদ জানান, তার কর্মস্থল মূলত ব্যাংকের লেনদেন নির্ভর। সোমবার (গতকাল) ছিল ব্যাংকের শেষ কর্মদিবস। বিকেল তিনটার মধ্যে ব্যাংক লেনদেন শেষ হয়ে যায়। বললেন, নিজের চাকরি, সন্তানদের স্কুল সব মিলিয়ে পরিবারের সবাই মিলে বাড়ি যাওয়া তেমন একটা হয় না। ঈদের ছুটিতে পরিবারের সদস্যদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার মজাই আলাদা। তবে বাসে নয়। মইজ্জ্যার টেক এলাকা থেকে সিএনজি চালিত ট্যাক্সি ছাড়া হয়। ট্যাক্সিগুলো আনোয়ারা-বাঁশখালী হয়ে পেকুয়া পর্যন্ত চলাচল করে।
একে খাঁন মোড় থেকে অলংকার পর্যন্ত সড়কের পাশে দাঁড়ানো বাসের সারি। বেসরকারি একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম জানান, দশ বছরের অধিক সময় ধরে তিনি বসবাস করছেন নগরীর ইপিজেড এলাকায়। পরিবারের চার সদস্য নিয়ে একবার কুড়িগ্রাম যেতে আর্থিক বাজেট খুব একটা কম নয়। বাসের টিকেট নিয়েছেন আরো দশদিন আগে। সন্ধ্যায় হানিফ পরিবহনে চেপে বসবেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির প্রবেশমুখ নগরীর অক্সিজেন এলাকা। গতকাল (সোমবার) বিকেলে দেখা যায়, খুব একটা বেশি ভিড় নেই সেখানে। অক্সিজেন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরির্দশক (এসআই) মৃণাল কান্তি দাশ জানান, ঘরমুখো মানুষের চাপ এখনো তেমন বাড়েনি। তবে মঙ্গলবার (আজ) ও বুধবার (আগামীকাল) ঘরে ফেরা মানুষের চাপ বাড়বে। মানুষের যাত্রা নিরাপদ করতে ট্রাফিক বিভাগ ও থানা পুলিশ সমন্বিতভাবে চেষ্টা করছি অক্সিজেন মোড় যানজটমুক্ত রাখতে।
পূর্বকোণ/পিআর