চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

বোয়ালখালী ক্রীড়া সংস্থা’র ‘গায়েবি’ কমিটি নিয়ে ধুম্রজাল

বোয়ালখালী ক্রীড়া সংস্থা’র ‘গায়েবি’ কমিটি নিয়ে ধুম্রজাল

মিন্টু বিভাস

৮ ডিসেম্বর, ২০২০ | ২:৪২ অপরাহ্ণ

২০১৮ সালে বোয়ালখালী উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পর গত রবিবার হঠাৎ করেই নাজিল হল ‘গায়েবি’ কমিটি। স্থানীয় সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ স্বাক্ষরিত একটি কমিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাসছে। যা নিয়ে এখন ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। হঠাৎ করেই বিধি-বিধান না মেনে গঠিত এ হাওয়া কমিটি নিয়ে অসন্তোষের দানা বেঁধেছে স্থানীয় ক্রীড়াঙ্গণে।

এ বিষয়ে জানতে গতকাল সাংসদ মোছলেম উদ্দিনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এ কমিটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি আছিয়া খাতুন।

তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘২০১৮ সালে স্থগিত হওয়া নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছি। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে চিঠি দিয়েছি। অনুমতি পেলেই নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘যেনতেনভাবে কমিটি করার সুযোগ নেই। ভোটের মাধ্যমে করতে হবে।’ ক্রীড়া সংস্থার গঠনতন্ত্রের ২২ অনুচ্ছেদের ৩ ধারায় বলা হয়েছে, কার্যকরী কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার ৬০ দিন আগে সভা আহ্বান করে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করতে হবে। উপজেলার প্রথম শ্রেণির এক কর্মকর্তাদের নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করতে হবে। কমিশনার রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ করে নির্বাচন পরিচালনা করবেন।

গত রবিবার এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ একাধিক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজে কমিটিটি প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, ক্রীড়াঙ্গণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, এমন লোকজনও কমিটিতে স্থান পেয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রাধান্য পেয়েছে। তবে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলায় জড়িত রয়েছে। তালিকায় সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক জহুরুল আলম জহুর। ২০১৮ সালে ঘোষিত তফসিলে একটি মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে তিনি সাধারণ সম্পাদকের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

জহুরুল আলম গতকাল পূর্বকোণকে বলেন, ‘কেউ ফলস (মিথ্যা) চিটিংগিরি করে ছেড়ে দিয়েছে। ক্রীড়া সংস্থার কমিটি গঠনের বিষয়ে তাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। এতে অনেক প্রসেসিং এর বিষয় রয়েছে।’

২০১৮ সালে ২০ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ক্রীড়া সংস্থার নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আছিয়া খাতুন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আশরাফ উদ্দিনকে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়। বিভিন্ন পদে একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। কিন্তু মনোনয়নপত্র দাখিলের পরদিন অদৃশ্য কারণে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন সদ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম ও ক্রীড়া সংগঠক হারুনুর রশিদ বাবলু।

সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘ক্রীড়া সংস্থা নির্বাচন না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে খেলাধুলায় স্থবিরতা নেমে এসেছে। খেলার মাঠে পুনরায় প্রাণ ফিরে আনার জন্য গঠনতন্ত্র মোতাবেক সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছে লিখিত আবেদন করেছি।’

এ বিষয়ে কমিটির একাধিক ব্যক্তি ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সরকার কর্মকর্তা, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ক্রীড়া সংস্থার তালিকাভুক্ত ক্লাব মিলে অন্তত ২০ জনের অধিক লোকের সঙ্গে কথা হয়। প্রত্যেকে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, কাউন্সিলরদের অন্ধকারে রেখে কোনো সভা না ডেকে কমিটি গঠনের বিষয়টি গর্হিত কাজ। কমিটি গঠনের বিষয়ে সরকারি বিধি-বিধান রয়েছে। তার ব্যত্যয় করে মনগড়া কমিটি গঠনের সুযোগ নেই।

 

 

 

 

 

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট