চট্টগ্রাম সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

ছবি ঘিরে প্রশ্ন - হত্যা নাকি আত্মহত্যা?

থানায় রহস্যজনক মৃত্যু: দুর্জয়ের ঝুলন্ত মরদেহ ঘিরে বিতর্ক!

চকরিয়া প্রতিনিধি

২২ আগস্ট, ২০২৫ | ৩:১৬ অপরাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়া থানা হাজতে দুর্জয় চৌধুরী (২৭) নামে এক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ বলছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে পরিবার দাবি করছে, দুর্জয়কে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে চাপ প্রয়োগ করা হয়েছিল।

মৃত দুর্জয় পৌরসভার ভরামুহুরী হিন্দুপাড়ার কমল চৌধুরীর ছেলে এবং চকরিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের অফিস সহকারী ছিলেন।

ঘটনার পর দুর্জয়ের ঝুলন্ত মরদেহের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ছবিতে দেখা যায়, তিনি গলায় কাপড় বেঁধে গ্রিলে হেলান দিয়ে ঝুলছেন। ছবিটি দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন— এমন অবস্থায় সত্যিই কি আত্মহত্যা সম্ভব? নাকি এটি সাজানো দৃশ্য?

নিহতের বাবা কমল চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের চেক জালিয়াতি ও নগদ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে দুর্জয়কে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। আসলে গত ১০-১২ দিন ধরে এই অভিযোগে তাকে মানসিকভাবে চাপে রাখা হচ্ছিল। এতে দুর্জয় বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। বৃহস্পতিবার আবারও একই অভিযোগে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত একটি কক্ষে জিম্মি করে রাখা হয়। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।’

চকরিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম বলেন, ‘দুর্জয় চেক জালিয়াতি করে ও নগদে প্রতিষ্ঠানের ২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগ দায়েরের সময় দুর্জয় আমার সঙ্গে ছিলেন। পরে পুলিশ তাঁকে আটক করে থানা হাজতে ঢুকিয়ে রাখে। এরপর আমি চলে আসি। শুক্রবার সকালে শুনেছি, দুর্জয় হাজতে আত্মহত্যা করেছে। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা।’
তিনি আরও দাবি করেন— দুর্জয়কে জিম্মি করে রাখা বা খারাপ আচরণের অভিযোগ সঠিক নয়।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দুর্জয় হাজতে নিজের শার্ট গলায় পেঁচিয়ে গ্রিলের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। শুক্রবার সকালে হাজত খুলে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুপায়ন দেবের উপস্থিতিতে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

চকরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন বলেন ‘ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। যদি পুলিশের কোনো গাফিলতি পাওয়া যায়, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পূর্বকোণ/জাহেদ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট