ডলারের দাম বাড়ায় বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। যার কারণে দেড় মাস পর আবারও দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল। রবিবার (২২ ডিসেম্বর) রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার কারণে এই রিজার্ভের পরিমাণ বেড়েছে বলে জানা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ৬ নভেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছিল। তবে ধীরে ধীরে তা কমতে শুরু করে এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যায়।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রোস রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম-৬ অনুযায়ী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার কোটি ৪২ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার (২০ বিলিয়ন ডলারের বেশি)। তবে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখনও ১৫ বিলিয়নের ঘরে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দেশে মোট রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের পরামর্শে বিপিএম হিসাবে তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। চলতি মাসের ২১ দিনে ২ বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। যা গতবছরের ডিসেম্বরের পুরো মাসের চেয়ে বেশি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৯ কোটি ডলার।
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ডলারপ্রতি ১২০ টাকা মূল্য নির্ধারণ ও বাজার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৯ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে স্থিতিশীল ছিল। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমদানি বৃদ্ধির কারণে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্সের ডলার কিনতে সর্বোচ্চ ১২৭.৭০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বেশি থাকায় ডলারের পরিমাণ বেড়ে যায়। এটি ব্যাংকগুলোর নতুন এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার সীমাবদ্ধতা শিথিল করতে সহায়তা করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত আমদানিতে ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যেখানে গত অর্থবছরে এ প্রবৃদ্ধি ছিল নেগেটিভ (ঋণাত্মক) ১০ শতাংশ। একই সময়ে রেমিট্যান্স ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়; আর রপ্তানি বেড়েছে ৮ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতি আরও বেড়েছে।
পূর্বকোণ/মাহমুদ