কক্সবাজারের টেকনাফে দুইদিনে ৩২ রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে চলমান যুদ্ধের মুখে পালিয়ে আসার পথে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌকাডুবির ঘটনায় টেকনাফে নাফনদীতে ভেসে আসা শিশুসহ আরও ১৮ জন রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় তাদের দাফন করা হয়েছে।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের তিনটি পয়েন্ট থেকে ১৮টি মৃতদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরে মৃতদেহগুলো মাদ্রাসা ও স্কুল পড়ুয়া তরুণদের সহায়তায় স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। আগের দিন মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া ও রাজারছড়া পয়েন্ট এলাকার সাগরে শিশুসহ নয় রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
দাফন কাজে নিয়োজিত থাকা শাহপরীরদ্বীপের বাসিন্দা মোহাম্মদ সালমান বলেন, নাফনদীতে ভেসে আসা ১৭ রোহিঙ্গার মৃতদেহ পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় মৃতদেহগুলো দাফনের কাজ চলছে। আমার ভাগে আজকে ১১ জনের দাফনের দায়িত্ব রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা মৃতদেহ দাফন সম্পন্ন করেছি। এছাড়া ডাঙাপাড়া কবরস্থানে আরও সাতজনকে দাফন করছে আরেকটি দল।
শাহপরীরদ্বীপের ইউপি সদস্য (মেম্বার) আবদুল মন্নান ও আবদুস সালাম বলেন, বুধবার দুপুরে নাফ নদীতে ভেসে আসা শিশুসহ ১৮ রোহিঙ্গার মরদেহ পাওয়া গেছে। পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে কথা বলে তাদের স্থানীয়ভাবে দাফন করা হয়েছে। এ ছাড়া মঙ্গলবার ৬ আগস্ট আরও পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এ নিয়ে মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দিনে শাহপরীরদ্বীপ এবং সদর ইউনিয়নের সৈকত থেকে মোট ৩২ জন রোহিঙ্গা নারী শিশু ও পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
নাফনদী থেকে রোহিঙ্গাদের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওসমান গনি বলেন, সাগরে রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় জেলে ও স্থানীয়রা বুধবার আরও ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ নিয়ে মঙ্গলবার ও বুধবার দুইদিনে শাহপরীরদ্বীপ এবং সদর ইউনিয়নের সৈকত থেকে মোট ৩২ জন রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দেশে চলমান পরিস্থিতির কারণে আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে মরদেহগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। যাদের স্বজনরা মরদেহ নিতে আসছেন, তাদের হস্তান্তর এবং বাকিদের দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পূর্বকোণ/সুমন/জেইউ/পারভেজ