চট্টগ্রাম রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

গন্ধ পেলেই এলার্ম বাজাবে ‘গ্যাস লিকেজ ডিটেক্টর’

পূজন সেন, বোয়ালখালী

৩০ জানুয়ারি, ২০২৪ | ১২:২৮ অপরাহ্ণ

গ্যাস লাইনে লিকেজ হয়ে দুর্ঘটনা এখন নিত্যদিনের বিষয়। এইসব দুর্ঘটনা এড়াতেই ‘গ্যাস লিকেজ ডিটেক্টর’। লিকেজ হয়ে গ্যাস ছড়ালেই বাজবে এলার্ম। এমনই এক ‘গ্যাস লিকেজ ডিটেক্টর’ প্রযুক্তির প্রজেক্ট বিজ্ঞান মেলার স্টলে উপস্থাপন করে ক্ষুদে বিজ্ঞানী সৃজন চৌধুরী। তার এই উদ্ভাবন ব্যবহার করা গেলে রক্ষা পাবে জানমাল।

গতকাল সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বোয়ালখালীতে ৪৫তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় হাজি আজগর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সৃজন চৌধুরী এই প্রজেক্টটি উপস্থাপন করে। তার এই প্রজেক্টটির কারণে বিজ্ঞান প্রকল্প উপস্থাপন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে হাজি আজগর আলী উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়া উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছে সৃজন। সে উপজেলার পশ্চিম শাকপুরা গ্রামের বাসুদেব চৌধুরী ও রুমা কারণ দম্পতির সন্তান।

 

সৃজন চৌধুরী জানায়, সম্প্রতি চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেইদিন সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া মামার বাড়ি থেকে বোয়ালখালীতে ফিরছিলো সৃজন। তার আত্মীয়-স্বজনরা নগরীর বাসায় গ্যাস না থাকার কথা জানাচ্ছিল ফোনে। অনেকেই চুলার সুইচ অন করে রেখে ছিলো সেদিন গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে কি না জানতে। এতে দুর্ঘটনা ঘটার প্রবল শংকাও ছিল। এছাড়া গণমাধ্যমে সে জানতে পারে, গ্যাস লিকেজ হয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণহানিসহ ক্ষয়ক্ষতির কথা। এইসব ঘটনা প্রতিরোধের কথা ভাবতে ভাবতেই এই প্রজেক্টের কথা মাথায় আসে। গ্যাস লিকেজ ডিটেক্টর তৈরিতে প্রাইভেট টিউটর ও স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষক অভিজিৎ চৌধুরী তাকে সহায়তা করেন।

 

সৃজন চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, ‘গ্যাস লিকেজ ডিটেক্টর’ প্রজেক্টটি স্বল্প খরচে তৈরি করা সম্ভব। গ্যাসের গন্ধ পেলেই বাজতে থাকবে এলার্ম। এছাড়া ঘরে কেউ না থাকলে মোবাইলে পাওয়া যাবে বার্তা। এসময় বদ্ধ ঘরে চালু হয়ে যাবে এডজাস্ট ফ্যান। এটি বসতঘর, রান্নাঘর এবং গাড়িতেও ব্যবহার করা যাবে।

বোয়ালখালীতে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উপলক্ষে ৮ম বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ও বিজ্ঞান মেলার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। এই মেলায় অংশ নেয় উপজেলার ২৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্টল। এসব স্টলে খুদে বিজ্ঞানীরা উপস্থাপন করে নিজেদের আইডিয়ায় নির্মিত প্রকল্প।

 

মেলায় জুনিয়র ও সিনিয়র বিভাগে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। কুইজ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে কানুনগোপাড়া ড. বিভূতি ভূষণ উচ্চ বিদ্যালয়, দ্বিতীয় হয়েছে জৈষ্ঠ্যপুরা রমনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয় ও তৃতীয় হয়েছে বেঙ্গুরা খান বাহাদুর খলিলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়।

 

উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় জুনিয়র বিভাগে প্রথম হয়েছে সুবর্ণ বিশ্বাস (কানুনগোপাড়া ড. বিভূতি ভূষণ উচ্চ বিদ্যালয়), দ্বিতীয় হয়েছে সৃজন চৌধুরী (হাজি আজগর আলী উচ্চ বিদ্যালয়) ও তৃতীয় হয়েছে মালিহা জাহাঙ্গীর (সারোয়াতলী পূর্ণ চন্দ্র সেন উচ্চ বিদ্যালয়)। সিনিয়র বিভাগে প্রথম হয়েছে হাজি নুরুল হক ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আইমন আক্তার ও দ্বিতীয় হয়েছে ঈশা দেবী এবং তৃতীয় হয়েছে সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান।

 

৮ম বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে প্রথম হয়েছে কধুরখীল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ইমতিয়াজ উদ্দিন, দ্বিতীয় হয়েছে কানুনগোপাড়া ড. বিভূতি ভূষণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আল মুসাব্বির ও তৃতীয় হয়েছে জৈষ্ঠ্যপুরা রমনী মোহন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্পণা বড়–য়া।
ই জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উপলক্ষে ৮ম বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড এবং বিজ্ঞান মেলার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরান হোসাইন সজীব। প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম রাজা।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট