ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের হাতে জিম্মি ২ শতাধিক ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মুক্ত করা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর অন্যতম লক্ষ্য; তবে সেজন্য গাজায় যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা ইসরায়েলের নেই।
মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদিশাসিত এই ভূখণ্ডের এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা রোববার সিএনএনকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের যত দ্রুত সম্ভব মুক্ত করতে চায়; কিন্তু সেজন্য গাজায় যুদ্ধবিরতির কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। কারণ, আমাদের মিশন হলো হামাসকে ধ্বংস করা এবং এমন কোনো পদক্ষেপ আমরা নিতে চাইছি না— যা এই মিশনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে আমরা গাজায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানোর সুযোগ করে দিয়েছি। রাফাহ ক্রসিং খুলে গেছে। ইসরায়েলের অনেকেই তা পছন্দ করেনি, কিন্তু তারপরও আমরা এটি করেছি গাজার সাধারণ ফিলিস্তিনিদের জন্য; কিন্তু হামাসকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলের উত্তরাংশে ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। সেদিন কয়েকশ’ হামাস যোদ্ধা বুলডোজার দিয়ে সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলের প্রবেশ করেন, শত শত ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের হতাহত করেন এবং ইসরায়েল থেকে ২ শতাধিক মানুষকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যান।
এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের নাগরিকরা রয়েছেন এবং তাদের সবাই বেসামরিক নাগরিক।
হামাসের এই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী, (আইএএফ) যা এখনও চলছে। এই অভিযানে ইতোমধ্যে ৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহতও হয়েছেন।
রোববার লেবাননে এক সংবাদ সম্মেলনে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা ওসামা হামাদান জানিয়েছেন, জিম্মিদের মুক্ত করতে হলে অবশ্যই গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা বন্ধ করতে হবে।
হামাসের সেই সংবাদ সম্মেলনের পর এই ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান সিএনএনকে জানিয়েছেন ইসরায়েলের ওই কর্মকর্তা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি ও জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে সারাক্ষণ ইসরায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বাইডেন প্রশাসন।
রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্লিনকেন বলেন, ‘আমরা চাই প্রত্যেক জিম্মি নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরে আসুক। ইসরায়েলের সঙ্গে এ ব্যাপারে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং এক মুহূর্তের জন্যও জিম্মিদের মুক্ত করার ব্যাপারটিকে আমরা মনযোগের কেন্দ্র থেকে সরাচ্ছি না।’
পূর্বকোণ/এসি