চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষের সঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থিত ইতালি এম্বাসির চার্জ-দি-এফেয়ারস ড. মাত্তিয়া ভেঞ্চুরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) পৃথক সাক্ষাতে মিলিত হন তিনি। এ সময় ড. মাত্তিয়া ভেঞ্চুরা ইতালি-বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কেবল ঢাকানির্ভর না হয়ে চট্টগ্রামের সাথে সম্পর্ক গভীর করতে চায় বলে জানান।
সাক্ষাৎকালে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হওয়ায় এখানে শিল্পায়নের যে বিপুল সুযোগ রয়েছে তা গ্রহণ করতে পারে ইতালি। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক সম্ভাবনার প্রসারে আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পুরো নগরীর অবকাঠামোখাত সংস্কার করছেন এবং আরো বেশ কিছু প্রকল্পের মাধ্যমে নগরী ও বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করছেন। ইতালি এই উন্নত অবকাঠামো কাজে লাগিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে।
জবাবে ইতালির চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. মাত্তিয়া ভেঞ্চুরা বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সাফল্যে আকৃষ্ট হয়ে ইতালি বাংলাদেশে বিপুল বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহী। বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে পরিবেশগত মাপকাঠিতে না উৎরাতে পেরে বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্য ইউরোপে ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারছে না। অথচ প্রতিবছর বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ চামড়া উৎপাদিত হয়।
বিশ্বে ইতালির চামড়াজাত পণ্যের যে বিপুল বাজার তা প্রসারিত করতে ইতালি বাংলাদেশে বিনিয়োগের কথা ভাবছে। যার ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৈচিত্র্য তৈরি হবে এবং ইতালিও লাভবান হবে। ইতালি বাংলাদেশের সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কেবল ঢাকাকেন্দ্রীক না হয়ে চট্টগ্রামকেও গুরুত্ব দিয়ে আগাতে চায়।
বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ইতালিতে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছেন। বাংলাদেশি শ্রমিকরা এত দক্ষ যে ইতালির জাহাজ নির্মাণখাতে সবচেয়ে প্রাধান্য পাচ্ছে বাংলাদেশি শ্রমিকরা। একারণে ইতালি বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ভিসাপ্রক্রিয়া সহজ করে ভিসা প্রদানের হার বাড়িয়েছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ড. মাত্তিয়া ভেঞ্চুরা বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করেন। এছাড়াও তিনি ইতালিতে অবস্থিত বাংলাদেশে অভিবাসীদের কর্মদক্ষতা ও গঠনমূলক কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। ইতালিতে শিপব্রেকিংসহ বিভিন্ন পেশায় বাংলাদেশিদের চাকরির অনেক সুযোগ রয়েছে মর্মে চার্জ-দি অ্যাফেয়ার্স জানান।
তিনি ইতালি ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে ইতালির সরকার ও বিভিন্ন কমিউনিটি বাংলাদেশে বিনিয়োগ আগ্রহ রয়েছে বলে জানান।
চউক চেয়ারম্যান বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সহজে বিনিয়োগ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সল্পসময়ে ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র, ইমারত নির্মাণ অনুমোদন, বিশেষ প্রকল্প ছাড়পত্র, ব্যবহার সনদ অনুমোদনসহ সিডিএ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। পরবর্তীতে তিনি সিডিএর বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরেন।
সৌজন্য সাক্ষাতে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, আবুল হাসনাত মো. বেলাল, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাশেম এবং প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বোর্ড সদস্য জসীম উদ্দীন শাহ, মোহাম্মদ ফারুক, প্রকৌশলী মুনীর উদ্দিন আহমদ, জিনাত সোহানা চৌধুরী এবং চউক এর সচিব মোহাম্মদ মিনহাজুর রহমান, চউক প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, উপসচিব অমল গুহ, ডিসিটিপি আবু ঈসা আনসারী, অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজের, সিস্টেম এনালিস্ট মো. মোস্তফা জামাল, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামীম ও রাজীব দাশ, অথরাইজড অফিসার-২ মোহাম্মদ ইলিয়াছ, প্রকৌশলী কাজি কাদের নেওয়াজসহ বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
পূর্বকোণ/জেইউ/এএইচ