পশুর দাম বেড়ে যাওয়ায় একা কোরবানি দেওয়া বেশ জটিল হয়ে উঠেছে নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য। আবার শহুরে জীবনে কয়েকজন মিলে ভাগে কোরবানি দেয়াও কঠিন। ঠিকঠাক অংশীদার মেলানো, পশু কেনা, রক্ষণাবেক্ষণ, কোরবানির মাংস ব্যবস্থাপনা-সবকিছু বড় মুশকিলের কাজ শহরের বাসায়।
এমন কোরবানি দাতাদের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে নগরীর বেশ কয়েকটি এগ্রো ফার্ম। তাদের প্রদর্শনী স্টলে গিয়ে গরু পছন্দের পর কেবল ভাগের টাকা জমা দিলেই জবাই থেকে শুরু করে সব প্রক্রিয়া শেষে মাংস কোরবানি দাতার বাসায় পৌঁছে দেবে এসব এগ্রো ফার্ম। এ জন্য দিতে হবে না অতিরিক্ত কোনো খরচ।
নগরীতে ভাগে কোরবানি দাতাদের জন্য বড় অফার দিচ্ছে ডিসি রোডের হারুন ফুড এন্ড এগ্রো। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন-গরু জবাইয়ের পর মাংসের ওজন অনুযায়ী প্রতি ভাগের টাকা নির্ধারণ করেছেন তারা। কোরবানি দাতা ওই ভাগের টাকাই কেবল পরিশোধ করবেন। বাকি সব দায়িত্ব তারা পালন করবেন। বাসায় পৌঁছে দেবেন রান্না উপযোগী মাংস।
ভাগের টাকা কেমন পড়তে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে হারুন ফুড এন্ড এগ্রোর মালিক আরমান খান পূর্বকোণকে বলেন, জবাইয়ের পর আনুমানিক ৭৫-৮০ কেজি ওজনের গরুর মাংসের প্রতিভাগ ১৩ হাজার, ১১০-১১৫ কেজির প্রতিভাগ ১৯ হাজার, ১৩০-১৩৫ কেজির প্রতিভাগ ২২ হাজার, ১৬০-১৬৫ কেজির প্রতিভাগ ২৩ হাজার, ২২০ কেজির প্রতিভাগ ৩১ হাজার টাকা পড়বে।
তিনি বলেন, এ বছর ভাগে কোরবানি দেওয়ার জন্য আমরা ২০টি গরু তৈরি করেছি। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১২টি গরুর বুকিং শেষ হয়েছে। বাকি গরুর বুকিং নেওয়া হচ্ছে। যারা বুকিং দিয়েছেন, কোরবানির দিন সকালে গরু জবাইয়ের পর সব প্রক্রিয়া শেষ করে তাদের বাসায় দুপুরেই ভাগের মাংস পৌঁছে দেব আমরা। এ জন্য ডেলিভারি চার্জ বা হিডেন চার্জ দিতে হবে না।
ভাগে কোরবানি দাতাদের জন্য অফার দিচ্ছে এজেএস এগ্রো কর্তৃপক্ষও। নগরীর কল্পলোক আবাসিক এলাকা ও পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন মাঠে প্রদর্শনী স্টল রয়েছে এই এগ্রোর। ভাগে কোরবানি দেওয়ার জন্য তারা ৩৫টি গরু তৈরি করেছে। এরমধ্যে ২০টি গরুর ভাগ বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। নিজস্ব স্টলে বাকি গরুর বুকিং নেওয়া হচ্ছে।
এজেএস এগ্রোর এমডি সাজ্জাদ হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, ঈদের বন্ধে বহু মানুষ গ্রামে যেতে পারেন না। চাকরিজীবী থেকে শুরু করে অনেকে নগরীতেই কোরবানি দেন। কিন্তু যারা ভাগে কোরবানি দিতে চান- তারা নানা ঝামেলায় পড়েন। তাদের কথা মাথায় রেখেই আমরা একটি উদ্যোগ নিয়েছি। ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী একটি গরুতে ৭ ভাগ থাকবে।
সাজ্জাদ আরো বলেন, ছোট আকারের গরুর জন্য ভাগ প্রতি ১৭ হাজার, মাঝারি গরুর জন্য ভাগপ্রতি ২০ হাজার ও বড় গরুর জন্য ভাগপ্রতি ২৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছি আমারা। কোরবানি দাতারা গরু দেখার পর ভাগের টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। কোরবানির দিন পুরো কার্যক্রম তিনি নিজ চোখে দেখার সুযোগও নিতে পারবেন। সার্ভিস চার্জ দিতে হবে ১০ শতাংশ।
পূর্বকোণ/এসি