চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

কাভার্ডভ্যানে সিলিন্ডার বসিয়ে গ্যাস বিক্রি, চট্টগ্রামে ৬১৪ সিলিন্ডারসহ গ্রেপ্তার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ মার্চ, ২০২৩ | ১:৪৩ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় অবৈধভাবে ভ্রাম্যমাণ রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপন করে চারটি কাভার্ডভ্যানে সিলিন্ডার বসিয়ে গ্যাস বিক্রির দায়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৭। এ সময় ৬১৪টি গ্যাস সিলিন্ডার জব্দ করা হয়েছে।

 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া গ্রামের মো. আব্দুল হকের ছেলে মো. আজিজুল হক (৪৫), মৃত আব্দুল রহমানের ছেলে মো. আলমগীর (৪০) ও হাতুরাপাড়ার মৃত আহমদ হোসেনের ছেলে হুমায়ুন কবির (২৭)।

 

রবিবার (২৬ মার্চ) সকাল ১০টায় কেরানীহাট-বান্দরবান সড়ক থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

 

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সকালে কেরানীহাট-বান্দরবান সড়কে অবৈধ ভ্রাম্যমাণ সিএনজি স্টেশনে চারটি কভার্ডভ্যানের ভেতরে গ্যাস রিফুয়েলিং করার সময় ৬১৪টি সিলিন্ডারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তারা কোন বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এমনকি তাদের কাছে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের কোন অনুমোদন ছিলা না।

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপন করে ও জব্দ কর্ভাডভ্যানগুলোর বডির সাথে সংযুক্ত সিলিন্ডারের মাধ্যমে সিএনজিতে রূপান্তর কারখানা স্থাপন করে অটোরিক্সায় গ্যাস বিক্রি করে আসছিল। চক্রটি মূলত সিএনজি ফিলিং স্টেশনের আড়ালে সরাসরি গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহ করার পাশাপাশি বিশেষ প্রক্রিয়ায় কভার্ডভ্যানের ভেতর সিলিন্ডার স্থাপন করে মিটার ব্যতীত মূল গ্যাসলাইন থেকে গ্যাস মজুদ করে। এসময় গ্যাস অবৈধভাবে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালীসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় চড়া মূল্যে বিক্রি করে আসছে। প্রত্যেকটি কভার্ডভ্যানে আনুমানিক গড়ে ১৫৩টি করে সিলিন্ডার স্থাপন করা রয়েছে।

 

র‌্যাব আরও জানায়, গ্যাস সিলিন্ডারগুলো অবৈধ ও সম্পূর্ণ অনিরাপদ পদ্ধতিতে একত্রে কভার্ডভ্যানে স্থাপিত যা সরকারিভাবে প্রদানকৃত নীতিমালা বর্হিভূত। সিলিন্ডারগুলোর মেয়াদ সম্পর্কিত কোন তথ্যাদিও জব্দকরা কভার্ডভ্যান ও আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া যায় নি। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী- এ সকল সিলিন্ডার অনেক পুরাতন এবং কখনোই এগুলোর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়নি। ফলে এইসব সিলিন্ডার থেকে বড় ধরনের দুর্ঘটনা, পরিবেশ ও মানব বিপর্যয় ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও কিছু কিছু সিলিন্ডার পরীক্ষা করে দেখা যায়- তা অত্যন্ত নাজুকভাবে সংযুক্ত করা, যা কাপড় দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। ফলে কোন ধরনের বিস্ফোরণ ঘটলে তার ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে।

 

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুর আবছার বলেন, এসব সিলিন্ডার থেকে অত্যন্ত নাজুক পদ্ধতিতে এবং অনিরাপদভাবে একটি ডিস্ট্রিবিউশন মেশিনে লাইন নিয়ে সেখান থেকে সিএনজি অটোরিক্সা ও বিভিন্ন গাড়িতে গ্যাস প্রদান করা হতো। ওই মেশিন যাচাই করে দেখা যায়- তা চালনা করার জন্য বিদ্যুতের সংযোগটিও অবৈধভাবে গ্রহণ করা এবং অত্যন্ত দুর্বলভাবে বিদ্যুতের তার ও সুইচ বোর্ডের মাধ্যমে সংযোজিত। এছাড়াও ওই মেশিনের ভেতরে সস্তা তার দিয়ে নাজুকভাবে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে আলোর জন্য লাইট লাগানো হয়েছে, যা থেকে যেকোন সময় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হয়ে অগ্নিসংযোগ হতে পারে এবং বৃহৎ আকারের বিস্ফোরণ ঘটতে পারে।

 

তিনি আরও বলেন, মূলত এই চক্রটি সিএনজি গ্যাস সংগ্রহ করে বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ সিএনজি স্টেশন স্থাপন করে প্রতি লিটার প্রচলিত বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে আসছে। অবৈধ ও অনিরাপদভাবে গ্যাস সরবরাহ ও বৈদ্যুতিক সংযোগের কারণে ও এই গ্যাস বিক্রির ফলে তারা বিপুল পরিমাণ সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে এবং সরকার বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট