চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

দায় থেকে খালাস

শ্রম আইন অমান্যের মামলায় জরিমানা গুনলেন ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা অফিস

১২ মার্চ, ২০২০ | ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ

শ্রমআইন অমান্যের এক মামলায় সাড়ে সাত হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধ ও আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিষ্কৃতি পেলেন গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের চেয়ারম্যান নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আদালত তাকে ক্ষমা করে মামলার দায় থেকে খালাস দেন। সূত্র জানায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান রহিবুল আলমের আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার আসামি উপস্থিত হয়ে ক্ষমা প্রার্থণা করেন। তারা আদালতকে বলেন, এ ধরনের ভুল আর কখনও হবে না। এরপর থেকে তারা শ্রম আইন মেনে চলবেন। ক্ষমা প্রার্থনার পরে বিচারক ড. ইউনূসসহ চার আসামিকে সাড়ে সাত হাজার করে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন এবং তাদের ক্ষমা করে মামলা থেকে খালাস দেন।
গত ৫ জানুয়ারি শ্রম আইনের ১০টি নিয়ম লঙ্ঘন করায় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) তরিকুল ইসলাম। মামলায় ড. ইউনূস ছাড়াও তিনজনকে বিবাদী করা হয়। মামলার অন্য বিবাদীরা হলেন- গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজনীন সুলতানা, পরিচালক আ. হাই খান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (জিএম) গৌরি শংকর।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মামলার বাদী ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর গ্রামীণ কমিউনিকেশনসে সরেজমিনে পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির দ্বারা ১০টি বিধি লঙ্ঘনের বিষয় তাদের চোখে পড়ে।
এর আগেও গত ৩০ এপ্রিল বাদীপক্ষের এক পরিদর্শক প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করে ত্রুটিগুলো সংশোধনের নির্দেশনা দেন। এরপর ৭ মে ডাকযোগে এ বিষয়ে বিবাদী পক্ষ জবাব দিলেও তা সন্তোষজনক হয়নি। পরে ২৮ অক্টোবর বর্তমান পরিদর্শক আবারও তা অবহিত করেন। নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করে বিবাদীরা ফের সময়ের আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনের সময় অনুযায়ী তারা জবাব দাখিল করেননি। এতে প্রতীয়মান হয় যে, বিবাদীরা শ্রম আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন।
এমতাবস্থায় বিবাদীরা বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬, বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৩ ধারা ৩৩ (ঙ) এবং ৩০৭ মোতাবেক দ-নীয় অপরাধ বলে বাদী মনে করেন।
যে ১০টি বিধি লঙ্ঘন করেছে ড. ইউনূসের কোম্পানি, তা হলো- ১. বিধি মোতাবেক শ্রমিক/কর্মচারীদের নিয়োগপত্র, ছবিসহ পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বই প্রদান করা হয়নি। ২. বিধি মোতাবেক শ্রমিকের কাজের সময়ের নোটিশ পরিদর্শকের নিকট হতে অনুমোদিত নয়। ৩. কোম্পানিটি বার্ষিক ও অর্ধবার্ষিক রিটার্ন দাখিল করেনি। ৪. কর্মীদের বৎসরান্তে অর্জিত ছুটির অর্ধেক নগদায়ন করা হয় না। ৫. কোম্পানির নিয়োগবিধি মহাপরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত নয়। ৬. ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি ও উৎসব ছুটি প্রদান-সংক্রান্ত কোনো রেকর্ড/রেজিস্টার সংরক্ষণ করা হয় না। ৭. কোম্পানির মুনাফার অংশ ৫% শ্রমিকের অংশগ্রহণ তহবিল গঠনসহ লভ্যাংশ বণ্টন করা হয় না। ৮. সেফটি কমিটি গঠন করা হয়নি। ৯. কর্মীদের অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করালেও কোনো ঠিকাদারি লাইসেন্স গ্রহণ করেননি। ১০. কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতর থেকে লাইসেন্স গ্রহণ করেনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট