চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রেল ও সড়ক যোগাযোগ প্রায় বন্ধ এবার বিক্ষোভে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৪:১৩ পূর্বাহ্ণ

নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের প্রতিবাদে এবার বিক্ষোভে উত্তাল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। গতকাল শনিবার সকালে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দফায় দফায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ, রেল-সড়কপথ অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ। বাস-গাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে রাজ্যজুড়ে তীব্র আতঙ্ক ও অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়ছে। এদিকে, নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইনকে মুসলমানদের জন্য ‘বৈষম্যমূলক’ বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ইসরায়েল দেশটির নাগরিকদের জন্য ভারত সফরে সতর্কতা জানিয়েছে। খবর : আনন্দবাজার পত্রিকা ও হিন্দুস্থান টাইমসের।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আসাম ও ত্রিপুরার পর পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে দফায় দফায় বিক্ষোভ, রেল-সড়ক অবরোধ চলছে গত দু’দিন ধরে। এই আইনের প্রতিবাদে গত শুক্রবার থেকেই রাজ্যে বিভিন্ন জেলায় ও শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। গত শুক্রবার দুপুরের পর থেকে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে হাওড়ার উলুবেড়িয়া, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা-সহ রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চলে। সন্ধ্যা নামার পর থেকে বিক্ষোভের আঁচ পড়ে রাজ্যের রাজধানী খোদ কলকাতা শহরেও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, কেউ যেন আইন নিজের হাতে না তুলে নেন। সে ক্ষেত্রে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন মমতা। ‘অরাজকতা’ বন্ধ করার কথা বলছেন রাজ্যের মন্ত্রীরাও। রাজ্যপাল নিজেও আইন মেনে চলার বার্তা দিয়েছেন প্রতিবাদকারীদের।

এদিকে বুধবার থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল রয়েছে আসাম-ত্রিপুরা। বৃহস্পতিবার পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে আসামে ৫ জন নিহত ও শতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মেঘালয়েও বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয় বিক্ষোভ। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গতকাল শনিবার সকাল থেকেই ডোমজুড়ের সলপ মোড়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছিল। কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ চলে। বেশ কয়েকটি সরকারি বাসে ভাঙচুর চালানো হয়। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করতে হয় পুলিশকে। একই সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এবং পূর্ব রেলের বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করা হয়। শিয়ালদহ ডিভিশনের বারাসত-হাসনাবাদ শাখায় বিক্ষোভের জেরে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায় সকাল সাড়ে ৬টা থেকে।

হাসনাবাদ শাখার সোঁদালিয়া-লেবুতলা স্টেশনের মাঝে অবরোধ করা হয়। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার লক্ষ্মীকান্তপুর-নামখানা লাইনে রেলের ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। সকাল ৮টা থেকেই ওই শাখায় ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। মালদহ ডিভিশনের আজিমগঞ্জ শাখাতেও বিক্ষোভের জেরে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন স্টেশনে আটকে ছিল বহু ট্রেন। যাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হয়। বাতিল করা হয় একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন। কিছু ট্রেন অল্প দূরত্বে চালানো হয়। আজিমগঞ্জ শাখার বাসুদেবপুরে হল্ট স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। খডড়গপুর শাখার সাঁকরাইল স্টেশনে বিক্ষোভকারীরা ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট