কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কোটি কোটি টাকার ক্যাবল চুরি করে পাচারের সঙ্গে জড়িত সিন্ডিকেটের ৬ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১১টায় গোয়ান্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের বিভিন্ন কোম্পানির এসব মূল্যবান ক্যাবল পাচারকালে নৌ-বাহিনীর সদস্যরা তাদের আটক করে।
নৌবাহিনীর মহেশখালীর কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আলী হায়দার চৌধুরীর নির্দেশে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সৈয়দ আহমেদ সাকিব ও লেফটেন্যান্ট মিনহাজুল আবেদীনের নেতৃত্বে একটি টিম বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪ নম্বর জেটিঘাট থেকে বার্জে উত্তোলনকালে তিনটি কন্টেইনারে থাকা ক্যাবল জব্দসহ ৬ জনকে আটক করে।
আটকরা হল- প্রকল্পের পস্কো কোম্পানিতে কর্মরত মহেশখালী মাতারবাড়ি বাংলাবাজার এলাকার মো. ছগিরের ছেলে মাহমুদুল হক, ইকবাল মেরিনের কর্মরত চট্টগ্রাম ভাটিয়ারী এলাকার বাসিন্দা এবাদুল হকের ছেলে নিজাম উদ্দিন, চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে মো. সেলিম, আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জাকির হোসেন, ফেনী ছাগলনাইয়া উপজেলার মুজিবুল হকের ছেলে মো. ফারুক, ফেনী সোনাগাজী উপজেলার বাসিন্দা নুরুল হক ও নোয়াখালী কোম্পানিগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মো. কামাল।
নৌ-বাহিনী জানায়, তাদের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পেয়েছে, কয়েকটি সিন্ডিকেট মাতারবাড়ী প্রকল্প কেন্দ্রিক ক্যাবল ও তামা পাচারের সঙ্গে দীর্ঘদিন চুরি-আত্মসাতে জড়িত। এ সিন্ডিকেটে কোলপাওয়ার প্রকল্পের কর্মকর্তা, সিকিউরিটি অফিসার, কর্মচারী, দলীয় ব্যানের থাকা নেতাকর্মী ও বিভিন্ন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে পেশাদার চোর-সন্ত্রাসীরা আছে। তাদের শনাক্ত কাজ করা হচ্ছে। সাথে গোয়ান্দা নজরধারী বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
এদিকে চোরাইকৃত ক্যাবলগুলো কোন গেট পাস না করে চট্টগ্রামস্থ কোম্পানি ইকবাল মেরিন সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বের করে জেটি ঘাটে নিয়ে যায় বলে জানান নৌ-বাহিনী।
আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উক্ত ঘটনায় কোলপাওয়ার প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম এবং প্রকল্পের সহকারী নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলফাজ হোসেনও জড়িত। বাকি কর্মকর্তারা প্রকল্পে কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায়, অনেকের প্রতি চোরাই সিন্ডিকেট জড়িত থাকার অভিযোগ থাকায় তারা লাপাত্তা হয়ে গা ঢাকা দিয়েছে বলে মনে করছেন অভিযানিক দলের সদস্যরা।
লেফটেন্যান্ট মিনহাজুল আবেদীন বলেন, জব্দ ক্যাবলের আনুমানিক মূল্য ১৫ কোটি টাকা। কয়েকটি চক্র আছে যারা মাতারবাড়ী প্রকল্প থেকে বিভিন্ন মূল্যবান তামার ক্যাবল চুরি করে পাচার করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে যা বিভিন্ন সময় সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। এ চক্রটির সঙ্গে প্রকল্প পরিচালক, সিকিউরিটি অফিসার, বিভিন্ন কর্মচারী, সিকিউরিটি গার্ড, রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, স্থানীয় ব্যবসায়ী, পেশাদার চোরদের সম্পৃক্ততা আমরা পেয়েছি। বাকিদের শনাক্ত করা কাজ চলতেছে।
পূর্বকোণ/হুবাইব/জেইউ/পারভেজ