চট্টগ্রামের চন্দনাইশ হাশিমপুর এলাকায় পল্লী চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে বয়োবৃদ্ধ মহিলা রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
গত শুক্রবার (২৯ মার্চ) ইফতারের পর পর দক্ষিণ হাশিমপুর বড়পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মৃত লাল মিয়ার স্ত্রী জান্নাত বেগম (৬০) পেট ব্যাথার কারণে পার্শ্ববর্তী খান বটতল এলাকার বিসমিল্লাহ ফার্মেসিতে পল্লী চিকিৎসক আবু ছালেহ্’র চেম্বারে যান। চিকিৎসক কিছু বুঝে উঠার আগে রোগীকে পর পর দুটি ইঞ্জেকশন দিলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে স্থানীয়রা চিকিৎসককে আটক করে পুলিশে দেন।
রোগী জান্নাত বেগমকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে দোহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই ব্যাপারে মৃত জান্নাত বেগমের ছেলে মো. আকবর বাদী হয়ে পল্লী চিকিৎসক মো. আবু ছালেহকে আসামি করে চন্দনাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মো. আবু ছালেহ্ পাঁচ বছর পূর্বে পরিবার পরিকল্পনা অফিসে পিয়ন হিসেবে চাকরি করে অবসর গ্রহণ করেন। পরে পল্লী চিকিৎসক হিসেবে ওষুধের ফার্মেসি দিয়ে চেম্বার করে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
পল্লী চিকিৎসক আবু ছালেহ্ পার্শ্ববর্তী সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম কাটগর মৃত ছিদ্দিক আহমদের ছেলে বলে জানা যায়।
তিনি বলেছেন, রোগীকে ব্যাথা নিরাময়ের জন্য দুটি ডাইক্লোপেকার ইঞ্জেকশন দিয়েছেন। যদিও পল্লী চিকিৎসক হয়ে সাইবোর্ডে লিখেছেন ডা. মো. আবু ছালেহ্- অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চিকিৎসক, রেজি: নম্বর ১৩৬১। মা ও শিশু সার্জিকেল অভিজ্ঞ। তিনি খৎনা, চর্ম, এলার্জি, বাত-ব্যাথা, ডেলিভারি, টিউমার, ডায়াবেটিস রোগের অভিজ্ঞ চিকিৎসক।
এই ব্যাপারে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. ওয়াজেদ চৌধুরী অভি বলেছেন, পল্লী চিকিৎসকরা ডাক্তার লিখতে পারেন না। নামের পরে পল্লী চিকিৎসক লিখতে হবে। তাছাড়া কোনো পল্লী চিকিৎসক ডাক্তারের ব্যবস্থা পত্র ছাড়া ইঞ্জেকশন দিতে পারবেন না। তার সাইনবোর্ডে যা যা লিখা রয়েছে তা সম্পূর্ণ অবৈধ ও বেআইনি।
চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল ইসলাম মামলা হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেছেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পল্লী চিকিৎসককে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। যথারীতি মৃত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিকে সে মামলায় আটক দেখিয়ে শনিবার (৩০ মার্চ) আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।
পূর্বকোণ/দেলোয়ার/জেইউ/পারভেজ