১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর বর্বরতা প্রতিরোধে পার্বত্য খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার গাড়িটানা, যোগ্যাছোলা ও পাশ্ববর্তী জেলা চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার ৪০ জন কিশোর একত্রিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার জন্য মনস্থির করেন। ওই বহরে শামিল হন গাড়িটানা এলাকার মো. আলী হোসেন। আর বহরের মূল গাইড (পথপ্রর্দশক) ছিলেন মাটিরাংগা উপজেলার গোমতির যুবক মো. আবদুর রহমান। ১৯৭১ সালের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে রামগড় হয়ে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে গেলে বহরটি তৎকালীন মহকুমা শহর রামগড় উপজেলার (বর্তমান মানিকছড়ির) ডাইনছড়ি এলাকায় গিয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। ওই সময় সেখানে অবস্থান করা অপর এক গাইড হেম রঞ্জন ত্রিপুরার কাছে বন্দী থাকা ৩ জন রাজাকারকে গুলি করে মারতে পারলেই প্রশিক্ষণে নেওয়া বা যাওয়ার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয় এই বহরকে। হেম রঞ্জন ত্রিপুরার হাতের গ্রেনেড দিয়ে তিন রাজাকারকে হত্যা করেন মো. আলী হোসেন।
এরপর মো. আলী হোসেন ও তার বহরে থাকা ৪০ কিশোর পায়ে হেঁটে মহকুমা শহর রামগড় হয়ে ভারতের সাব্রুম দিয়ে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ২১ দিন প্রশিক্ষণ শেষে প্লাটুন কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সুবোধ বিকাশ ত্রিপুরার নেতৃত্বে ১ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলী হোসেন ও তার দল।
নভেম্বর মাসের শেষান্তে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ভাই-বোনছড়ায় পাক-হানাদার বাহিনীর মুখোমুখি হন এই মুক্তিযোদ্ধারা। রাত ৯ টা থেকে টানা ৩ ঘণ্টার তুমুল যুদ্ধে এক পর্যায়ে পাক-হানাদার বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরে পাক-হানাদার বাহিনীর দলটি পালিয়ে যায় ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
পূর্বকোণ/পিআর