চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

তীর খুঁজে পাচ্ছে ‘তীররক্ষা’ প্রকল্প

মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

৯ মার্চ, ২০২৪ | ১:৩০ অপরাহ্ণ

২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে কর্ণফুলী নদীর ভাঙনরোধে ৩৫১ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। তৎকালীন সংসদ সদস্য প্রয়াত মইনউদ্দিন খান বাদল এ প্রকল্প নিয়ে বোয়ালখালীবাসীকে অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। বাদলের মৃত্যুর পর নদী ভাঙনরোধের স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটে। 

শুধু তাই নয়, ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙনরোধে আশ^াস দিয়েছিলেন তৎকালীন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ.কে.এম এনামুল হক শামীম। ২০২১ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ারও আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। সেই আশ্বাসও গুড়েবালি। 

বোয়ালখালীবাসীর দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত ভাঙনরোধের স্বপ্নপূরণের আশ্বাস দিয়ে পরপারে চলে গেলেন দুই সংসদ সদস্য। তারপরও আলোর মুখ দেখেনি প্রকল্পটি। এখন ভাঙনরোধের কাক্সিক্ষত প্রকল্পটির স্বপ্ন দেখাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আগামী একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন হতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (রাঙামাটি বিভাগ) তয়ন কুমার ত্রিপুরা পূর্বকোণকে বলেন, ‘কর্ণফুলী নদী ও সংযুক্ত খালের ভাঙনরোধ প্রকল্পটি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের পর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। আশা করছি, আগামী একনেক সভায় প্রকল্পটি উত্থাপন হবে।’

পাউবো সূত্র জানায়, প্রকল্পের ডিপিপিতে শুরুর মেয়াদকাল ধরা হয় চলতি বছরের জানুয়ারি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের জুন মাসে। সরকারের অর্থায়নে প্রকল্পের বাজেট ধরা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ সালে প্রকল্পের ডিপিপি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়। ২০২২ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু করার লক্ষ্য ধরেই প্রকল্প দাখিল করা হয়। ২০২৫ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে দীর্ঘদিন চাপা পড়েছিল প্রকল্পটি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পুনরুজ্জীবিত হয় প্রকল্পটি। 

কর্ণফুলী নদী, বোয়ালখালী-চন্দরিয়া ও রায়খালী খালসহ সংলগ্ন খালের ভাঙনরোধ প্রকল্পটি কাটছাঁটের পর ১৩৩ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়। ইতিমধ্যে প্রকল্পটি তিন দফায় কাটছাঁট করা হয়। প্রকল্পে কর্ণফুলী নদীর তীর রক্ষা ছাড়াও বোয়ালখালী খাল, রায়খালী ও ভারাম্বা খালের তীরসহ ৭ কিলোমিটারের বেশি অংশ ভাঙনরোধে প্রতিরক্ষা বাঁধ দেওয়া হবে। এরমধ্যে ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে প্রয়াত সংসদ সদস্য মইনউদ্দিন খান বাদল ৭২ কোটি টাকার একটি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছেন। ২০১৮ সালের এপ্রিলে কর্ণফুলী নদীর ভাঙনরোধে ৩৫১ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

পশ্চিম গোমদণ্ডী এলাকার বাসিন্দা মো. বাবুল, আবদুল মান্নান বলেন, মইনউদ্দিন খান বাদল এমপি হওয়ার পর থেকে ভাঙনরোধের আশ্বাস শোনে আসছি। ভোটের আগে প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতারা ভাঙনরোধের আশ্বাস দেন। কিন্তু ভোটের পর বেমালুম ভুলে যান। তারা বলেন, বোয়ালখালী খালের ভাঙনে অনেক বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি খালে তলিয়ে গেছে। অনেকেই উদ্বাস্তু হয়ে অন্য জায়গায় চলে গেছে। কিন্তু ভাঙনরোধের আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই মিলেনি।

মোছলেম উদ্দিন আহমদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর নতুন করে প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেন। কিন্তু বড় প্রকল্পে সরকারের অর্থ সাশ্রয়ের কারণে দীর্ঘদিন আটকে থাকে।

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট