চট্টগ্রাম রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

আ. লীগের ১০ নেতা মাঠে সক্রিয়

রবিউল আলম ছোটন, পটিয়া

২৩ জানুয়ারি, ২০২৪ | ১২:১৬ অপরাহ্ণ

পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দীর্ঘদিনের। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুরোনো দ্বন্দ্ব দাউদাউ করে জ্বলে উঠে। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী ও দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী তৎকালীন সংসদ সংসদ সামশুল হক চৌধুরীকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠে ভোটের মাঠ। সামশুল হককে ঠেকাতে একাট্টা হয়ে মাঠে নামে দলের সিংগভাগ নেতাকর্মী। ভোটের মাঠে কোণঠাসা হয়ে পড়েন সামশুল হক। বিপুল ভোটে জয়ী হন মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হন। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তিমির বরণ চৌধুরী বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোতাহেরুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হতে আওয়ামী লীগের অন্তত ১০ জন নেতা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। গত জাতীয় নির্বাচনে সবাই দলীয় প্রার্থী মোহাহেরুলের পক্ষে মাঠে  ভূমিকা পালন করেন।

 

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদত্যাগ করায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়ে চলছে পরিষদের কার্যক্রম। প্রথম ধাপে পটিয়া উপজেলার নির্বাচনের আভাস দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। বর্তমান সংসদ সদস্য ও দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের দুয়ারে দুয়ারে ধর্ণা দিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

 

তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকবে কিনা তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। সম্ভাব্য প্রার্থীদের বেশির ভাগই দলীয় নৌকা প্রতীকে নির্বাচনী জয়ের বৈতরণী পার হওয়ার আশায় প্রার্থীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।

 

প্রার্থিতার দৌড়ে যারা

বর্তমানে উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকারী ভাইস চেয়ারম্যান তিমির বরণ চৌধুরী এবার চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান। পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদের নাম বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। এছাড়াও আছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাশ, কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ম ম টিপু সুলতান চৌধুরী, মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল খালেক, উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও দক্ষিণ ভূর্ষি ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির সদস্য এম এ রহিম, উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক সৈয়দ নুরুল আবছার। সম্ভাব্য প্রার্থীদের ১০ জনই গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরীর পক্ষে ভোটের মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘নৌকা প্রতীকে নির্বাচন হলে সংসদ সদস্য, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা চাইলে নির্বাচন করব।’

 

জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দাশ বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে মনোনয়ন চাইব। তবে প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকলে দলের হাইকমান্ড চাইলে নির্বাচন করব।

 

বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তিমির বরণ চৌধুরী বলেন, ‘গত নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম। উপজেলা চেয়ারম্যান পদত্যাগ করায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতাদের পরামর্শে এবার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ নেব।’

 

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ পটিয়া উপজেলা পরিষদের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী।

 

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ করা হবে কিনা নাকি প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকবে- তা নিয়ে এখনো দোটানায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। তারপরও সম্ভাব্য প্রার্থীরা সভা-সমাবেশ ও ঘরোয়া বৈঠক করে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট