বোয়ালখালী উপজেলায় গত বছরের তুলনায় এবার তিনগুণ বেশি চাষ হয়েছে সরিষার। যদিও বৈরী আবহাওয়া ও আমন ধান দেরিতে কাটার কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত বছর বোয়ালখালীতে ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এবার তা তিনগুণ বেড়েছে। ১৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা বারি-১৪, ১৫, ১৬, ১৭ ও বীণা-৯ জাতের সরিষার চাষ করেছেন কৃষকেরা। তবে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৪৯ হেক্টর। অসময়ে বৃষ্টি ও আমন ধান কাটতে বিলম্ব হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আবাদকৃত জমিতে এবার সরিষার বাম্পার হবে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) উপজেলার পশ্চিম গোমদণ্ডী, সারোয়াতলী, করলডেঙ্গা, আমুচিয়া, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে হয়েছে সরিষার চাষ। সরিষা চাষীরা জানান, সরিষার ক্ষেতে এখন ফুল ও ফলন আসা শুরু হয়েছে। এবার সরিষার ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। আহলা করলডেঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক মো. দেলোয়ার ১২০ শতক জমিতে সরিষার চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, ঝড় বৃষ্টি না হওয়ায় চলতি মৌসুমে সরিষার ফলন ভালো এসেছে। ২৮০ শতক জমিতে সরিষার চাষ করেছেন আমুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল জলিল। তিনি জানান, জমি চষে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত তার খরচ হবে ২০ হাজার টাকা। সবকিছু ঠিক থাকলে ৪০ শতকে ৩ মণ সরিষা পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এতে প্রতি মণ সরিষা ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করলে খরচ বাদে লাভ হবে ৬৪ হাজার টাকা। জৈষ্ঠ্যপুরা গ্রামের কৃষক মো. আমিনুল হক বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে ১৫ শতক জমিতে সরিষা বুনেছি নিজের পরিবারের ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ বলেন, ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণে দেশে তেল বীজ উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে এই বছর রবি প্রণোদনার আওতায় ২০০ জন কৃষককে সরিষার বীজ ও সার দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলা পরিষদের আর্থিক সহায়তায় ১৫০ জনকে সরিষা বীজ ও সার দেওয়া হয়। এর বাইরে প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে ২৫ জন কৃষককে। ফলে সরিষার চাষ বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের তুলনায় এই বছর সরিষার ভাল ফলন এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে বোয়ালখালীতে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সরিষা উঠে যাওয়ার পর জমিগুলো উর্বর থাকে। এতে বোরো আবাদেও লাভবান হবেন কৃষকেরা।
পূর্বকোণ/এসি