চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

স্বস্তির বৃষ্টিতে কৃষকের হাসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ আগস্ট, ২০২৩ | ১২:১৬ অপরাহ্ণ

শেষ জুলাইয়ে দেখা মিলল বৃষ্টির। বৃষ্টির পানিতে এখন ছলছল করছে আমন ক্ষেত। নেচে উঠেছে কৃষকের মন। চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। চাষিরা বলেছেন, বৃষ্টিপাত না হওয়ায় উপযুক্ত সময়ে আমন ধানের চারা রোপণ শুরু করা যায়নি। এখন পুরোদমে শুরু হয়েছে।

 

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমন আবাদ হচ্ছে পুরোটায় বৃষ্টির পানিনির্ভর। জুন-জুলাই মাসে বৃষ্টির পানিতে চারা রোপণ শুরু হয়। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপযুক্ত সময়ে চারা রোপণ করা যায়নি।

 

বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল দে বলেন, পাহাড়ি এলাকায় শত শত একর জমিতে আমনের আবাদ করা হয়। জমি প্রস্তুত করেও পানির অভাবে চাষাবাদ করতে পারেনি কৃষকেরা। শেষে আমরা সেচ প্রকল্প চালুর করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার মহিমায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এখন চারা রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।

 

গতকাল দুপুরে কথা হয় বোয়ালখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিপাত না হওয়ায় টেনশনে ছিলাম। সেচ প্রকল্প চালু করার জন্য স্কিম ম্যানেজার ও কৃষকদের নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু খরচ নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় সেচ প্রকল্প চালু করা যায়নি। বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় আমন রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।

 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩৮ হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চারা রোপণ করা হয়েছিল ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে।

 

কৃষি বিভাগ জানায়, দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে চট্টগ্রামে কিছুটা দেরিতে চাষাবাদ করা হয়। আমনের বীজতলা ও জমি আগেই প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া, প্রচণ্ড তাপদাহ ও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন রোপণে ব্যাঘাত ঘটে। এখন পুরোদমে চাষাবাদ শুরু হয়েছে।

 

দক্ষিণ কড়লডেঙ্গা সেচ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. ওসমান গণি বলেন, বীজতলা তৈরি করেও যথাসময়ে রোপণ করা যায়নি। উপযুক্ত সময়ে চারা রোপণ করতে না পারলে উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

 

গত বোরো মৌসুমেও বৈরী আবহাওয়া ও খরায় পুড়েছিল কৃষকের স্বপ্ন। এছাড়াও কর্ণফুলী নদীতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া কৃষকদের জন্য মরার উপর খাঁড়ার ঘাতে পরিণত হয়েছিল। দক্ষিণ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী ও খাল সংলগ্ন এলাকার চাষিরা বড় মার খেয়েছিল। আমন রোপণের মোক্ষম সময়েও খরায় পড়েছে কৃষক।

 

গত মঙ্গল ও বুধবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে আমন রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। কেউ জমিতে চাষ দিচ্ছেন, কেউ চারা রোপণ করছেন। বৃষ্টির পানিতে খুশি মনে আমন চারা রোপণ করছেন চাষিরা।

 

গোমদণ্ডী পৌরসভার মুফতিপাড়া এলাকার একটি বিলে দেখা যায়, জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে থৈ থৈ করছে আমন ক্ষেত। ১০-১৫ জন কৃষক চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষকেরা জানান, জমি আগ থেকে প্রস্তুত করা ছিল। পানি আসার পরপরই চারা রোপণ শুরু হয়েছে।

 

পটিয়ার ধলঘাট এলাকার চাষি রতন দে বলেন, বীজতলা তো আগেই প্রস্তুত ছিল। বৃষ্টির আশায় জমিও প্রস্তুত করা ছিল। এখন বৃষ্টিপাত ও জোয়ারের পানিতে ঢেউ খেলছে। সবাই চারা রোপণে জমিতে নেমে পড়েছেন।

 

পূর্বকোণ/মাহমুদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট