চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কালুরঘাটে ফেরি সার্ভিস : বাড়তি ফেরিতেও ভোগান্তি অসহনীয়

পূজন সেন, বোয়ালখালী

৩ আগস্ট, ২০২৩ | ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ

কালুরঘাটে চালু করা ফেরি সার্ভিসে অব্যবস্থাপনার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন পারাপারকারীরা। ফেরিঘাটের এপ্রোচ সড়ক, বেইলি ব্রিজ ডুবে কোমর পানিতে বিকল হয় যানবাহন, যাত্রীদের ওঠানামায় ভোগান্তি চরমে পৌঁছে। তবে গতকাল আরও একটি ফেরি চালু করা হয়।

 

এদিকে, ফেরির টোল আদায় নিয়ে টোল কর্মচারীদের সাথে প্রতিনিয়ত বাকবিতণ্ডা হচ্ছে মোটরসাইকেল আরোহীদের। এ নিয়ে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বন্ধ রাখা হয় ফেরি চলাচল। এর ঘণ্টা খানেক পর আবারো শুরু হয় ফেরি চলাচল।

 

এদিন একটি ফেরি চলাচল করে নদীতে। জোয়ারের পানিতে বেইলি ব্রিজ ডুবে যাওয়ায় বিঘ্নিত হয় ফেরি পারাপার। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চালু হয় ফেরি চলাচল। তবে জোয়ারের পানিতে ফেরির এপ্রোচ সড়ক ও বেইলি ব্রিজ ডুবে যাওয়ায় যানবাহন ফেরিতে ওঠানামা করতে পারছিল না। ফলে থমকে যায় ফেরি পারাপার। নদীর দুই পাড়ে আটকে পড়ে শতশত যানবাহন। এ সময় যাত্রীসাধারণ নৌকায় নদী পারাপার করেন। বিকেল চারটা পর্যন্ত গাড়ি নিয়ে ফেরিঘাটে জোয়ারের পানি কমার অপেক্ষায় থাকেন টেম্পো ও ট্যাক্সি চালকরা। গত মঙ্গলবার ও বুধবার বিকেল পর্যন্ত একটি ফেরি চলাচল করে।

 

সওজের নিযুক্ত অস্থায়ী কর্মচারী মো. জয়নাল বলেন, জোয়ারের পানি কমলে বিকেলে আরো একটি ফেরি যানবাহন পারাপারে যুক্ত হবে। বড়চাকার গাড়ি ফেরিতে উঠতে পারলেও পানির কারণে ছোট চাকার গাড়ি ফেরিতে উঠতে পারছে না। ফলে সময় লাগছে ফেরি পারাপারে।

 

এ সময় ফেরির অপেক্ষায় না থেকে যাত্রী সাধারণ নৌকায় নদী পারাপার করেছে। প্রতিজন ১০টাকা ভাড়ায় নৌকায় পারাপার করছেন মাঝিরা।

 

কধুরখীলের বাসিন্দা মো. হায়দার বলেন, ‘মঙ্গলবার সেতু পায়ে হেঁটে পার হয়েছিলাম। এখন তাও বন্ধ করে দিয়েছে। ফেরিতে পার হতে এসে দেখি ফেরি পারাপার বন্ধ জোয়ারের পানির কারণে। তাই নৌকায় পার হব।’

 

সুমাইয়া আকতার নামে এক নৌকা যাত্রী বলেন, ‘ফেরির অপেক্ষায় থাকলে চাকরিতে আর যেতে হবে না। ১২টা বেজে যাবে। কাজ না করলে খাবো কি। তাই নৌকায় চড়ে বসেছি।’

 

ট্যাক্সিচালক সুজন বলেন, ফেরি চলাচলের কোন টাইম টেবিল নেই। কখনো এসে দেখি বন্ধ, আবার কখনো এসে দেখি চলছে। একবার পার হতে প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে।

 

সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, ‘আজ (বুধবার) থেকে দুইটি ফেরি চলাচল করছে। জোয়ারের কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফেরি পারাপারে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।’

 

এদিকে জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ শুরু করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সেতুর দুইপাশে নিরাপত্তা ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। জেনারেটর, স্কেভেটরসহ সংস্কারের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সেতু এলাকায় পৌঁছাচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

 

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আবু জাফর মিঞা পূর্বকোণকে বলেন, কালুরঘাট সেতুর সংস্কার কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। যেহেতু সেপ্টেম্বরের মধ্যেই কক্সবাজার ট্রেন চালুর টার্গেট রয়েছে। ৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুটি সংস্কার করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চালু করবে রেলওয়ে। সেই লক্ষ্যে ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটি সংস্কার করা হচ্ছে। এজন্য তিনমাস বন্ধ রাখা হয়েছে কালুরঘাট সেতুতে যানচলাচল।

 

পূর্বকোণ/মাহমুদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট