চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পুলিশের লাঠি চার্জে পন্ড হয়ে গেছে যুবদলের ঈদ পুনর্মিলনী। এসময় বিএনপি-যুবদল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, ৬ পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২১ জন আহত হন। পুলিশ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মান্দারীটোলা সাগর উপকূলে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা যুবদল। এই অনুষ্ঠানে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত হন। কিন্তু এই এলাকাটিতে রয়েছে ৫টি বৃহৎ গ্যাস কারখানা। কোন পর্যটন স্পট না হওয়া সত্ত্বেও ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস রিফুয়েলিং কারখানা এলাকায় সভার আয়োজন করায় এদিন দুপুরে সেখানে সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে এখানে এত লোক নিয়ে সভা করার কারণ জানতে চান। এ নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে তাদের হাতাহাতি শুরু হলে উভয় পক্ষ পরস্পরের উপর চড়াও হয়। এতে পুলিশের লাঠি চার্জে বিএনপি নেত্রী ও সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুন নাহার নেলীসহ অন্তত ১৫ জন দলীয় কর্মী এবং তাদের হামলায় সীতাকুণ্ড থানার এস.আই মুকিবসহ ৬ জন আহন হন।
এদিকে সংঘর্ষ ও পুলিশের অ্যাকশনের কারণে সভা পণ্ড হয়ে গেলে নেতাকর্মীরা পালিয়ে যেতে থাকেন। তবে পুলিশ যুবদল নেতা আরঙ্গজেব মোস্তফাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুল করিম চৌধুরী বলেন, বাড়বকুণ্ড সাগর পাড়ে আমরা শান্তিপূর্ণ ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করছিলাম। এতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিকাল ৩টার দিকে সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে আনুমানিক ৫০-৬০ জন পুলিশ উপস্থিত হয়ে অতর্কিতে লাঠি চার্জ শুরু করে। এতেই মহিলা নেত্রী সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুন নাহার নেলী, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুল করিম চৌধুরী, ইসমাইল হোসেন, মামুনুর রহমান মিন্টু, যুব নেতা শাহাবুদ্দিন রাজুসহ প্রায় ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঐ এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. ছাদাকাত উল্লাহ। তিনি বলেন, এই শিল্প এলাকার মধ্যে বিএনপি কোন অসৎ উদ্দেশ্যে সভা করছিলো। দেশের সর্বত্র আগুন বা নাশকতার কথা শোনা যাচ্ছে। এমনি অবস্থায় ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস কারখানা এলাকার মধ্যে তাদের এই সভার আসল উদ্দেশ্যে কি তা খতিয়ে দেখা জরুরি।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রথম এত লোক নিয়ে সভা করতে হলে অবশ্যই প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। দ্বিতীয়ত তারা কোন পর্যটন স্পট বা কমিউনিটি সেন্টারে সভা না করে সভার আয়োজন করেছে দেশের সর্ববৃহৎ ৫টি গ্যাস কারখানার পাশে খোলা জায়গায়। ঈদের ছুটির কারণে ঐসব কারখানার কর্মীরাও ছুটিতে। এমনি অবস্থায় সেখানে সভা করে সরকার বিরোধী উসকানিমূলক বক্তব্য রাখার খবর পেয়ে নাশকতা বা অন্য কোন অসৎ উদ্দেশ্য আছে কিনা খতিয়ে দেখতে আমরা সেখানে গেলে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এর জেরে তারা আমাদের উপর ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। ফলে আত্মরক্ষার্থে আমরাও লাঠি চার্জ করেছি এবং তাদের ৫ জন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করেছি।
অন্যদিকে তাদের হামলায় এস.আই মুকিবসহ ৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা সীতাকুণ্ড সরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এসব বিষয়ে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে ওসি জানান।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ