চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

পুলিশ অফিসার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো না লোকেশের!

১৩ মে, ২০২২ | ১২:৫৮ অপরাহ্ণ

সেকান্দর আলম বাবর  

মায়ের সাথে শেষ কথা হয় লোকেশের ঠিক ১টার দিকে। মাকে বলে, ঘুরে ফিরে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবে। ৬ বন্ধু মিলে কাপ্তাইয়ে বেড়াতে যাওয়া সবাই বেলা ২টায় নামে কর্ণফুলির সীতারঘাট মন্দির এলাকায় গোসল করতে। তবে তার বাড়ি ফেরা হয়েছে ঠিকই, জীবিত নয়-খাটে চড়ে। দ্বিপ্রহরে ফিরেছেন লোকেশ, তবে বাবার কাঁধে লাশ হয়ে। পানিতে নামা ৬ বন্ধুর ৪জন সাঁতরে কুলে উঠতে পারলেও পানির স্রোতে তলিয়ে যায় বোয়ালখালীর লোকেশ ও তার বন্ধু অপূর্ব সাহা। বোয়ালখালীর সারোয়াতলী হোরারবাগ গিয়ে দেখা যায়, লোকেশের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। মা-বাবার বুকফাঁটা আর্তনাদ কিছুতেই থামাতে পারছে না প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা। হঠাৎ এমন পরিস্থিতির জন্য কেউ প্রস্তুত ছিল না তারা। সবকিছু যেন এলামেলো হয়ে গেলো। কথা হয় তাদের আত্মীয় মাস্টার শ্যামল মজুমদারের সাথে।

তিনি জানান, বোয়ালখালী হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদের সদস্য অপু কুমার বৈদ্যের এক মেয়ে এক ছেলে। দু’জনই কলেজ পড়ুয়া। ঈদের ছুটিতে ছেলে বন্ধুদের নিয়ে লোকেশ বৈদ্য বেড়াতে যান কাপ্তাইয়ে। বুধবার সকাল ৭টায় বের হয়ে প্রথমে চিৎমরম যান। এরপর গোসল করতে নামেন কর্ণফুলিতে। সে থেকে তার আর জীবিত ফেরা হলো না তার। তিনি বলেন, বাবা-মাসহ আমাদের ছেলে লোকেশের ইচ্ছে ছিল পুলিশ অফিসার হবে। পুলিশের চাকরি করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবে। সে স্বপ্ন নিয়ে অনেকদূর এগিয়েছেও বটে। পিইসি, জেএসসি, এসএসসি পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করে বারবারই আমাদের বলেছে পুলিশ অফিসার হবে সে। সে স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত পূরণ হলো না। এসময় কান্নাজড়িত কন্ঠে লোকেশের বাবা অপু বৈদ্য বলেন, অত্যন্ত শান্ত অমায়িক স্বভাবের ছেলে ছিল লোকেশ। সবকিছুকে সহজে মেনে নেয়ার যথেষ্ট ক্ষমতা ছিল তার। ছিল পরোপকারী। কল্পনা করিনি ছেলেকে হারাতে হবে। সে যাওয়ার আগে আমি কেন গেলাম না-এ বলে ফের কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বারবার মুর্চা যাচ্ছিলেন তিনি। আর মা বাবলী বৈদ্য, বোন অপি বৈদ্য যেন নির্বাক চেয়ে পুত্র আর ভাইয়ের আসার প্রহর গুনছিলেন ফ্যালফ্যাল বাইরে তাকিয়ে।

পূর্বকোণ/এস  

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট