
এনায়েত হোসেন মিঠু
ঊনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে এলাকার প্রসিদ্ধ আমান উল্যাহ ভূঁইয়া বাড়ির সংস্কার কাজে মনোনিবেশ করেন শেখ হাজী গোলাম সুলতান চৌধুরী। সেই সময় তিনি বাড়ির সামনে দৃষ্টিনন্দন একটি সুরম্য মসজিদ নির্মাণ করেন। যার নামকরণ করেন তাঁর পূর্বপুরুষ আমান উল্যাহ ভূঁইয়ার নামে। মিরসরাই উপজেলার মিঠানালা গ্রামে অবস্থিত এ মসজিদ যে কোন দর্শনার্থীকে মুগ্ধ করে। এর স্থাপত্য শৈলী মোঘল আমলের আদলে তৈরি বলে ধারণা করা হয়।
মসজিদটি নির্মাণে অসংখ্য বিদেশি মূল্যবান পাথর ব্যবহার করা হয়। মসজিদটি কারুকার্য খচিত নকশায় নির্মিত। সামনে পুকুর, খোলামেলা মাঠ থাকার দরুণ মসজিদটির সৌন্দর্য বহুলাংশেই বেড়ে গেছে। মসজিদের সামনের ফলক থেকে জানা গেছে ১৯২৮ সালে এটি নির্মিত হয়। এটির প্রতিষ্ঠাতা আমান আল্যাহ ভূঁইয়ার বংশধর বিশিষ্ট দানবীর শেখ হাজী গোলাম সুলতান চৌধুরী। মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা শেখ হাজী গোলাম সুলতান চৌধুরী এলাকার শিক্ষা ও অসংখ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর জীবদ্দশায় তিনি মুসাফিরদের মসজিদভিত্তিক খাওয়ার ব্যবস্থা করতেন। এ মহান ব্যক্তি ১৯৫৪ সালে ইন্তেকাল করেন। তার নির্মিত মসজিদের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
স্থানীয় মিঠানালা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মিজানুল হক পূর্বকোণকে জানান, আমার নিজের ওয়ার্ডের প্রখ্যাত আমান উল্যাহ ভূঁইয়া বাড়ির সামনে ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদের অবস্থান। এটির নির্মাণ শৈলী এত সুন্দর যে, মসজিদটি এক পলক দেখতে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন। আমরা মনে করি এটির মূল নকশা ঠিক রেখে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করার মধ্য দিয়ে এটিকে ইতিহাস ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করা দরকার। শেখ হাজী গোলাম সুলতান চৌধুরী তৎকালীন সময়ে মিরসরাইয়ের অন্যতম জমিদারদের একজন ছিলেন। তিনি মিঠানালা ইউনিয়নের পূর্ব মিঠানালা গ্রামের ঐতিহ্যবাহী আমান উল্যাহ ভূঁইয়া বাড়িতে ১৮৮৩ সালে একটি বনেদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পরিণত বয়সে তিনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে বার্মা (মিয়ানমার) গমন করেন এবং প্রচুর ধনসম্পদ অর্জন করে এলাকায় দানবীর হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন।
পূর্বকোণ/এস