চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

একসঙ্গে ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ৪ ঘূর্ণিঝড়, ৭৪ বছরের ইতিহাসে বিরল ঘটনা

অনলাইন ডেস্ক

১২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৫:২৩ অপরাহ্ণ

চারটি আলাদা সামুদ্রিক ঝড় পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে ঘূর্ণায়মান অবস্থায় রয়েছে এবং একই সময়ে শক্তিশালী হচ্ছে। দুর্যোগের ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা, যাতে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তারা জানিয়েছেন, ব্যতিক্রমী এই দুর্যোগের কারণ হচ্ছে মহাসাগরের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া। এসব ঘূর্ণিঝড় ঝড়প্রবণ ফিলিপাইনের জন্য আরও দুর্ভোগ বয়ে আনতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

 

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে নিশ্চিত করেছে, যে ১৯৫১ সালে ঝড় সংক্রান্ত রেকর্ড শুরু হওয়ার পর গত ৭৪ বছরের মধ্যে এবারই প্রথমবারের মতো নভেম্বর মাসে চারটি ভিন্ন ভিন্ন নামযুক্ত ঝড় একই সঙ্গে শক্তিশালী হচ্ছে।

 

যৌথ টাইফুন সতর্কতা কেন্দ্রের স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যাচ্ছে, চারটি ঝড় পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের বিশাল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত যা ভিয়েতনাম থেকে গুয়াম পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে।

 

এই চারটি ঝড়ের নাম হচ্ছে টাইফুন ইনশিং, টাইফুন তোরাজি, ক্রান্তীয় ঝড় উসাগি এবং ক্রান্তীয় ঝড় ম্যান-ই। প্রতিবছর ফিলিপাইন একাধিক ঝড়ের কবলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কিন্তু গত মাসে ধারাবাহিক টাইফুনের তীব্র গতি পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলেছে এবং হাজার হাজার মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। খবর সিএনএনের।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) টাইফুন ইনশিং উত্তর-পূর্ব ফিলিপাইনে আঘাত হানে, যার বাতাসের গতিবেগ আটলান্টিকের ক্যাটাগরি ৪ হারিকেনের সমান ছিল। তবে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। ঝড়টি প্রবল বৃষ্টিপাত, উত্তাল ঢেউ এবং ভূমিধস ঘটিয়ে শেষ হয়।

 

ফিলিপাইনের ওপর দিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরে ঢুকে যাওয়ার পর ইনশিং পশ্চিম দিকে চীনের হাইনান প্রদেশের দিকে এগিয়ে যায় এবং এরপর ভিয়েতনাম অভিমুখে দক্ষিণে মোড় নেয়। বর্তমানে সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

 

টাইফুন ইনশিংয়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত কাগায়ান ও ইলোকো নর্তে অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের দেখতে যান ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। ‘যদিও আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ যে কোনো ধরনের প্রাণহানি হয়নি, তবে এর ঝড়টি যে ধ্বংসযজ্ঞ রেখে গেছে তাতে ক্ষতি ঘরবাড়ি, বিদ্যালয় এবং জীবন-জীবিকা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে।

 

রবিবার কাগায়ানে খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের সময় মার্কোস স্থানীয় বাসিন্দাদের এসব বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন পুনরুদ্ধারে মনোযোগ দিচ্ছি, তখনও আমরা আরেকটি সম্ভাব্য ঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি যা আমাদের দিকে ধেয়ে আসতে পারে।

 

পরদিন টাইফুন তোরাজি লুজোনের অরোরা প্রদেশের পূর্ব উপকূলে আঘাত হানে। এর বাতাসের গতি আটলান্টিকের ক্যাটাগরি ওয়ান হারিকেনের সমান। এর আগে আরও হাজারো মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়।

 

এখন একটি ক্রান্তীয় ঝড়ে রূপান্তরিত হওয়া তোরাজি দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি দক্ষিণ-পূর্ব চীনের কিছু অংশে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত ঘটাতে পারে। কিন্তু দেশটি আরও একটি শক্তিশালী ঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা পাঁচ দিনের মধ্যে তৃতীয়। ট্রপিক্যাল স্টর্ম উসাগি লুজোনের প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত এবং ফিলিপাইনের দিকে ধেয়ে আসার সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ এটি একটি টাইফুনে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন