চট্টগ্রাম সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

সাঁতারু তৈরিতে কর্মযজ্ঞে সিজেকেএস

হুমায়ুন কবির কিরণ

২৮ মে, ২০২৩ | ১২:২৩ অপরাহ্ণ

২০১৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের অন্যতম আধুনিক সুইমিংপুল চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করলে সাধারণ ক্রীড়ামোদি মহল দেখেছিলেন আশার আলো। এর মাঝে করোনা মহামারীর ছোবলে হারিয়ে যায় দুটি ক্যালেন্ডার মৌসুম। করোনার প্রকোপ কমে গেলে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস)’র সুইমিং পুলটি। এরপর থেকে নিয়মিতই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন পর্যায়ে টুর্নামেন্ট। তারই একটি গতকাল অনুষ্ঠিত হলো, এবং বিস্ময়করভাবে সেটা হ্যান্ড টাইমিংয়ে।

 

দিনব্যাপী আয়োজনে ১৫টি ইভেন্টে ১২০ জন সাঁতারু অংশগ্রহণ করেন। চট্টগ্রামের সুইমিং পুলটি আধুনিক হলেও তাতে নেই ইলেক্ট্রনিক্স স্কোরবোর্ড।

 

বাংলাদেশ সাঁতার ফেডারেশনের নির্বাহী সদস্য ও সিজেকেএস সাঁতার কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আসলাম মোরশেদ জানালেন, সাঁতারের মতো ইভেন্টে সাফল্য পেতে হলে অনুশীলন যেমন প্রয়োজন তেমনি সাঁতারুদের মানগত অবস্থান জানতে ইলেক্ট্রনিক্স স্কোরবোর্ড অবশ্যই প্রয়োজন।

 

অনুশীলন প্রশ্নে তিনি জানালেন, সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আ জ ম  নাছির উদ্দীন চট্টগ্রামের সাঁতার উন্নয়নে আন্তরিক। তিনি চান প্রতি বছর স্কুল-কলেজ পর্যায় থেকে শুরু করে সিজেকেএস পর্যায়ে তিন বা চারটি প্রতিযোগিতা যেন নিয়মিত হয়। সাথে প্রতিটি টুর্নামেন্টের আগে সাঁতারুরা যাতে অনুশীলন করতে পারে সেদিকেও নজর দেওয়া হয়।

 

চট্টগ্রামের সাঁতারের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, আমরা নিয়মিত বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছি। এরমধ্যে চলছে বিভিন্ন পর্যায়ে শিখন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। প্রতিবন্ধী বা বিশেষ বিবেচনায় অনেকেই বিনামুল্যে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাচ্ছেন। যাদের বেশ ক’জন আজকের (গতকাল) প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছে। বিনামূল্যে অনুশীলনের সুযোগ পাচ্ছেন জেলার নিয়মিত সাঁতারুরাও। একই সাথে যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্যও নির্দ্দিষ্ট নিয়ম নীতি মেনে এই সুইমিং কমপ্লেক্স ব্যবহার করতে পারছে। 

 

সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক যোগ করেন, চট্টগ্রাম সুইমিং কমপ্লেক্সে প্রায় ১৬জন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও কোচ রয়েছেন। তাদের বেতন ভাতাসহ পুল পরিচালনা ব্যয় হিসাবে প্রতিমাসে প্রায় ৫ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। যার পুরোটাই বহন করছে সিজেকেএস। করোনাকালে পুরো বিশ্ব যখন বিপর্যয় অবস্থায় ছিল তখনও আয় শূন্য অবস্থাতেই বেতন ভাতাসহ যাবতীয় খরচ বহন করা হয়েছে। তুলনামূলক বিচারে নগরীর অন্যান্য সুইমিংপুলের তুলনায় এখানে কম খরচে এবং বিশেষক্ষেত্রে বিনা খরচে কিংবা আরও কম খরচে সাঁতার শিখতে পারছে আগ্রহীরা। এখন প্রয়োজন যথাযথ উদ্যোগের। যা আমরা ইতিমধ্যে গ্রহণ করেছি। আশা করছি ২ থেকে ৪ বছরের মধ্যে সুফল পাবে চট্টগ্রামের সাঁতার।

 

ইলেক্ট্রনিক্স স্কোরবোর্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তবে সাঁতারের উন্নয়নে এই যন্ত্রটি আবশ্যক। আমি চেষ্টা করছি দ্রুততম সময়ে সুইমিং পুল যাতে এই যন্ত্রটি পায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১৮ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন এবং এক থেকে চার বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর ঘটনার ৪৩ শতাংশই পানিতে ডোবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাও বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটছে।

 

এ প্রসঙ্গে সিজেকেএস সহ-সভাপতি ও সাঁতার কমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল বলেন, চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে সাঁতার শিখন কার্যক্রমের সাথে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। প্রসঙ্গত. ১১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত চট্টগ্রামের পুলটি ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন