রমজান মাসের প্রতিটি দিবস যেমনি ধর্মীয় উপলক্ষ তেমনিভাবে রাত্রিবেলাও রোজাদারের জন্য বিশেষ ফজিলত সমৃদ্ধ। দিনের বেলায় সিয়াম সাধনা আর রাত্রিকালীন নফল নামাজের মাধ্যমে রোজাদার আল্লাহ তা‘য়ালার সান্নিধ্য লাভে সক্ষম হয়।
হাদীস শরীফে এসেছে, ‘মান ক্বামা রমদ্বানান ঈমানান ওয়া ইহতিছাবান গুফিরা লাহু মা তাকাদ্দামা মিন জনবিহি’ অর্থ্যাৎ যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে রমজানে নামাজ আদায় করবে তার অতীতের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে- (মেশকাত শরীফ)।
তারাবি ও তাহাজ্জুদ নামাজ যদিও ফরজ নয়, তবু এ নামাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সীমাহীন। বান্দা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাহাজ্জুদের বিকল্প নেই। মাহে রমজানে যেহেতু প্রতিটি নফলের জন্য ফরজের সওয়াব দেয়া হয়, সেহেতু এই সময়ে তারাবি ও তাহাজ্জুদ অত্যন্ত ফজিলত সমৃদ্ধ ইবাদত।
তারাবি নামাজ হানাফি মাযহাব অনুযায়ী বিশ রাকাআত পড়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। প্রসিদ্ধ হাদীস সংকলন সহীহ মুসলিম শরীফ থেকে জানা যায়, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাসে নিজে তারাবি পড়েছেন এবং এ নামাজ আদায়ে সাহাবিদেরকে বিশেষভাবে উৎসাহ দিয়েছেন। তবে এটি ফরজ হিসেবে নয়। তারাবি নামাজ পুরুষেরা মসজিদে জামায়াত সহকারে পড়তে পারে। চাইলে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় মহিলারাও মসজিদের জামায়াতে হাজির হতে পারে কিংবা নিজেরা জামায়াতের আয়োজন করতে পারে, তবে মহিলাদের বিনা জামায়াতে ঘরে পড়াই উত্তম।
রমজান মাসে পুরুষদেরকে বিতরের নামাজ তারাবির সাথে জামায়াতে পড়তে হয়। পুরো রমজানে তারাবি‘র মধ্যে কুরআনুল কারীম খতম করা সুন্নাত। তবে অবশ্যই এটি হতে হবে ধীরে-সুস্থে, অর্থ ও ভাব বুঝার আগ্রহ সহকারে। তাড়াহুড়ো করে যেনতেনভাবে খতমে তারাবি পড়ার শরঈ কোন মূল্য নেই।
কোন্ কোন্ মসজিদে তারাবির’র ক্বিরাত এতই দ্রুত পড়া হয় যে মুকতাদিরা কোন কিছুই বুঝে উঠতে পারে না-এতে এখলাছ নেই। ৭ দিনে কিংবা ১০ দিনে তাড়াহুড়ো করে খতমে তারাবি সম্পন্ন করার প্রয়াস ফলপ্রসূ নয়। আমাদেরকে সর্বাবস্থায় আল কুরআন তারতীলের সাথে ধীরে-সুস্থে পড়তে হবে।
আসুন, আমরা রমজান মাসে ফরজ আদায়ের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল নামাজ ও জিকির-আজকারের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতে সাফল্য এবং অত্যধিক ফয়জ-বরকত হাছিল করি।
পূর্বকোণ/ইব