যুক্তরাজ্যে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভর্তি হবেন ‘লন্ডন ক্লিনিকে’, যেখানে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি ধনাঢ্য ব্যক্তিরা চিকিৎসা নিতে যান।
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘‘লন্ডন ক্লিনিক বলে একটা পুরনো ঐহিত্যবাহী হসপিটাল আছে, সেই হসপিটালে উনাকে (খালেদা জিয়া) ভর্তি করা হবে। হিথ্রো এয়ারপোর্ট থেকে উনাকে সরাসরি সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। এই হসপিটালে উনি চিকিৎসাধীন থাকবেন।”
মঙ্গলবার রাত ১০টায় কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে দোহা হয়ে লন্ডন পৌঁছাবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
তার বিদেশযাত্রার প্রস্তুতির বিস্তারিত তুলে ধরে সোমবার গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, “এই মুহূর্তে যে সকল ফর্মালেটিজ আছে, সেগুলো সম্পন্ন করা হচ্ছে।”
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পাঁচ মাস বাদে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। প্রাথমিক পরিকল্পনায় তার লন্ডন হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা বলা হলেও এখন যুক্তরাজ্যের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়াই চূড়ান্ত হয়েছে।
সবশেষ সাড়ে সাত বছর আগে যুক্তরাজ্যেই চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। সেবার চোখ ও পায়ের চিকিৎসা নিয়েছিলেন। লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, আর্থ্রাইটিস, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিলতায় তিনি ভুগছেন।
মাঝে কারাবন্দি জীবনের পর শর্তসাপেক্ষে মুক্তি মিললেও বিদেশে তার চিকিৎসার অনুমতি দেয়নি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। এই অনুমতির জন্য তার দল আন্দোলন-সংগ্রাম করেও সুবিধা করতে পারেনি।
সেই কারণে ২০১৭ সালের ১৫ জুলাই বিএনপি চেয়ারপারসনের লন্ডনযাত্রার পর আর কোনো বিদেশ সফর হয়নি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জাহিদ হোসেন বলেন, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা জেনে রাজকীয় বহরের এই বিশেষ উড়োজাহাজ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘‘কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। এই বিমানেই ম্যাডামের আগামীকাল রাতে লন্ডন যাত্রা শুরু হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কাতারের চারজন চিকিৎসক ছাড়াও প্যারামেডিকসরা থাকবেন। তাদের সঙ্গী হবেন খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের ছয় সদস্য। তারা হলেন- অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার, অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিক, অধ্যাপক নরুদ্দিন আহমেদ, ডা. জাফর ইকবাল, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. মোহাম্মদ আল মামুন।
এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে যাবেন তার ছোট ছেলের স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল ও খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তারসহ ব্যক্তিগত কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী।
পূর্বকোণ/আরআর/পারভেজ