চট্টগ্রাম সোমবার, ১৭ জুন, ২০২৪

রেলের নতুন আইনের খসড়া প্রণয়ন

ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ ৫ লাখ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ মে, ২০২৪ | ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ

দুই ট্রেনের সংঘর্ষ কিংবা ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে যাত্রীর মৃত্যু হলে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের বিধান রেখে রেলওয়ে আইন-২০২৪ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনায় অঙ্গহানিতে এক লাখ, অন্ধত্বের জন্য দুই লাখ, হাড় বা দাঁত ভাঙার জন্য লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে কার্যকর রেলওয়ে আইন-১৮৯০ এ মৃত্যুর জন্য ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের বিধান রয়েছে। তবে আহতদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই।

 

 

১৮৯০ সালের ব্রিটিশ আমলের আইনে চলছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ১৯৭৭ সালে এর সংশোধন হয়। সম্প্রতি এই আইন যুগোপযোগী করার সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এরই অংশ হিসেবে রেলওয়ে আইন-২০২৪ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে। রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, খসড়াটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। আরও কয়েক ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্ত হওয়ার পর মন্ত্রিসভায় যাবে। সেখানে অনুমোদন পেলে সংসদে যাবে।

 

 

নতুনভাবে তৈরি করা আইনের খসড়ার ১২টি অধ্যায়ে ১৫৭টি ধারা রাখা হয়েছে। ১৮৯০ সালের আইনে ১১টি অধ্যায়ে ১৫০টি ধারা রয়েছে। নতুন যোগ হওয়া অধ্যায়টি রেলের মহাপরিচালক, মহাব্যবস্থাপক পদ-সংক্রান্ত। আইনের পঞ্চম অধ্যায়টি শুধু রেলপথের সুবিধা-সংক্রান্ত। নতুন আইনের খসড়ায় এতে বীমা ও মামলা-সংক্রান্ত বিষয় যোগ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

 

 

সূত্র জানায়- খসড়া আইনে পাথর ছুড়ে যাত্রীদের হতাহত করা এবং ট্রেনের ক্ষতিসাধনের সাজা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ঢিলের আঘাতে ট্রেনের ক্ষতির সমপরিমাণ জরিমানা দিতে হবে দায়ী ব্যক্তিকে। এ ছাড়া যুক্ত হবে কারাদণ্ডের বিধান। পাথরের আঘাতে যাত্রীর মৃত্যু হলে দায়ী ব্যক্তির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করার সুপারিশ করা হয়েছে।

 

 

আইনের খসড়ার রেলওয়েতে বেসরকারি ট্রেন পরিচালনার সুযোগ তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। ফলে সরকারের পূর্ব অনুমতি নিয়ে রেলওয়ে বাংলাদেশি কোম্পানিকে রেলপথ ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারবে। বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারিত্ব রয়েছে এমন কোনো দেশীয় কোম্পানি কিংবা বিদেশি রেলওয়ে কোম্পানিকেও রেলপথ ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে চুক্তি করতে পারবে।

 

 

বর্তমানে কয়েকটি কমিউটার ট্রেন পরিচালনা করে বেসরকারি ইজারাদার। সেগুলোর ইঞ্জিন-বগি রেলের সম্পত্তি। নতুন আইন হলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিন-বগি কিনে ট্রেন পরিচালনায় আসতে পারবে। এতে রেলের কারও কারও আশঙ্কা বেসরকারিকরণের দিকে যেতে পারে রেলওয়ে। তবে এই কাজ আপাতত কঠিনই মনে করছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।

 

 

বর্তমানে ট্রেনে মাতলামির সাজা ২০ টাকা জরিমানা। নতুন আইনের খসড়ায় তা বাড়িয়ে হাজার টাকা অথবা এক বছর কারাদণ্ডের সুপারিশ করা হয়েছে। রেলওয়ের কর্মচারী কোনো যাত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত করলে দুই বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। বর্তমানে এ অপরাধের শাস্তি ৫০০ টাকা জরিমানা।

 

 

বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণে দুই হাজার টাকা, টিকিট কালোবাজারিতে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা এক বছরের কারাদণ্ডের সুপারিশ করা হয়েছে। পিকেটিং বা অন্য কোনোভাবে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটালে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দুই বছরের কারাদণ্ডের সুপারিশ রয়েছে খসড়ায়।

পূর্বকোণ/এসএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট