চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘বকশিস কম পেয়ে’ খুলে নিল অক্সিজেন, মুহূর্তেই স্কুলছাত্রের মৃত্যু!

অনলাইন ডেস্ক

১০ নভেম্বর, ২০২১ | ১:৩৭ অপরাহ্ণ

হাসপাতালের কর্মচারী বকশিস চেয়েছিলেন ২০০ টাকা। রোগীর দরিদ্র বাবা দিতে পেরেছিলেন ১৫০ টাকা। এতেই ক্ষেপে গিয়ে রোগীর অক্সিজেনের নল খুলে দেন সেই কর্মচারী। ফলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ১৭ বছরের এক স্কুলছাত্র।

ঘটনার পর অভিযুক্ত কর্মচারী ধলু হাসপাতালের আনসারদের সহায়তায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে

মঙ্গলবার রাতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের তৃতীয়তলায় সার্জারি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।

বুধবার (১০ অক্টোবর) সকালে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বকশিস কম দেওয়ায় হাসপাতালের খণ্ডকালীন কর্মচারী এ অপরাধ করেছে। স্কুলছাত্রের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শজিমেকের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, জরুরি বিভাগের একজন মেডিকেল অফিসারের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। অভিযোগের সততা পেলে খণ্ডকালীন কর্মচারী দুলুর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, মৃত বিকাশ চন্দ্র গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুটিমারী গ্রামের বিশু চন্দ্র কর্মচারের ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। সংসারে অভাবের কারণে বিকাশ লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করত।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সে বাইসাইকেলে বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ওই ছাত্র মাথায় গুরুতর আঘাত পায়। তাকে প্রথমে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাত ১০টার দিকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

বিকাশের কাকা শচীন চন্দ্র কর্মকার জানান, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কাজ শেষে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অক্সিজেনসহ ভাতিজাকে তৃতীয়তলায় সার্জারি বিভাগে নেওয়া হয়। ট্রলি বহনকারী হাসপাতালের কর্মচারী আসাদুজ্জামান দুলু বেডে পৌঁছে দেওয়ার পর ২০০ টাকা বকশিস দাবি করে। বিকাশের বাবা ১৫০ টাকা দিলে দুলু আরও ৫০ টাকার জন্য বাকবিতণ্ডা শুরু করে।

টাকা দিতে না পারায় ক্ষুব্ধ দুলু বিকাশের অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলে। তাকে মাস্ক লাগাতে অনুরোধ করলে সে অস্বীকৃতি জানায়। বাধ্য হয়ে নিজেরা মাস্ক লাগালোর চেষ্টা করেন। এ সময় নাক-মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে বিকাশ মারা যায়। চিকিৎসক এসে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এ সময় রোগীর লোকজন ওই দুলুর ওপর চড়াও হলে কর্তব্যরত আনসারদের সহযোগিতায় সে পালিয়ে যায়। বিকাশের কাকা শচীন চন্দ্র কর্মকার এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট