চট্টগ্রাম সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘স্বপ্নযাত্রী’র আয়োজন অন্তর মম বিকশিত কর

সুহৃদ রহমান

১৮ মে, ২০১৯ | ২:১১ পূর্বাহ্ণ

‘সর্ব শাস্ত্রানাং বোধাদপি গরীয়সী… যারা আবৃত্তির সাথে সংশ্লিষ্ট তারা এই কথাটি শুনে থাকবেন। সংস্কৃত ভাষায় আবৃত্তি শাস্ত্রকে সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট শাস্ত্র বা শিল্প হিসেবে মূল্যায়িত করেছেন। শিল্পীর সাধনা মূলত স্বকীয়তা, নতুনত্বে ভেতরেই নিহিত। শিল্পকর্মের অমূল্য লেনদেন হয় মনোজগতে তার পরিমাপ হয় সৌন্দর্যের বিমূর্ত মাপকাঠিতে। শিল্পের উত্তরণ প্যাশন আর ভালোবাসার ভিতর দিয়ে ঘটে। এই ভালোবাসার জন্য নেশা ঘোর লাগে… লাগে সংকল্প। সৃজনভাবনা বৃত্তপথে এসে নাড়া দেয় মনোবৃত্তে প্রাণবৃত্তে দেহবৃত্তে আদান প্রদানের রূপে প্রকাশিত হয় ব্যক্তিত্বে।
আবৃত্তি সংগঠন ‘স্বপ্নযাত্রী’ বিগত ১০ বছর ধরে বিশুদ্ধ মানুষ নির্মাণের ঠিক এই কাজগুলোই করে চলেছেন। একই সাথে ক্রমাগত চর্চার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্বপ্নের স্বদেশ বিনির্মাণেও বিশাল ভূমিকা রেখে চলেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় সামাজিক দায়বোধ ও মানবিক সচেতনতায় সৃজনশীল তারুণ্যের বিপ্লবী আকাক্সক্ষা নিয়ে ‘স্বপ্নযাত্রী’ সাংগঠনিক আবৃত্তিচর্চায় তারুণ্যের স্বপ্নে প্রতিনিয়ত যে সুন্দরের বুনন করে চলেছে তা অনন্য। জন্মলগ্ন থেকেই এ শিল্পসাধনায় অবিরাম পথে হাঁটছেন সব বাঁধা উপেক্ষা করেও। পাল্টে যাওয়া সময়ের ঘাত-প্রতিঘাত ধারণ করেও এ শিল্পের উৎকর্ষতার প্রায়োগিক দিক বিবেচনা করে ২য় বারের মতো তারা আয়োজন করেছে চারজন নবীন শিল্পীর একক আবৃত্তি অনুষ্ঠান ‘অন্তর মম বিকশিত কর’। গত ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির আর্ট গ্যালারী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আয়োজনে প্রত্যেক শিল্পী নিবেদন করেছে ৫টি করে কবিতা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করে বক্তব্য রাখেন উচ্চারক আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি, আবৃত্তিশিল্পী ও প্রশিক্ষক ফারুক তাহের। এছাড়া বক্তব্য রাখেন আবৃত্তিশিল্পী দেবাশীষ রুদ্র, মো. মুজাহিদুল ইসলাম ও কবি অধ্যাপক মুহাম্মাদ আমানুল্লাহ। সংগঠনের অনুষ্ঠান সমন্বয়ক শিল্পী উমেসিং মারমা ঊর্মি ও মিথিলা মারমা’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সভাপতি আলী প্রয়াস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাখেন যুগ্ম-সম্পাদক ইয়াসির সিলমী। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাবেক সভাপতি রুদ্র রাজীব।
তার পরপরই শুরু হয় স্বপ্নযাত্রীর চার জন শিল্পীর একক আবৃত্তি পরিবেশনা। এতে অংশগ্রহণ করেন আবৃত্তিশিল্পী লুজাইনা আনোয়ার নোহা, ফারজানা আক্তার, সামিয়া আরেফিন, উম্মুল মাছাকিন ফাল্গুন। শিল্পীরা প্রত্যেকেই নির্বাচিত কবির চারটি করে মোট ১৬ টি কবিতা আবৃত্তি করেন।
উপস্থিত বিপুল দর্শকরা আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। স্বপ্নযাত্রী যে স্বপ্ন নিয়ে চট্টগ্রামের আবৃত্তি অঙ্গনে বিচরণ করছে, তাদের এই নবীন আবৃত্তিকাররাই একদিন মহীরুহ হয়ে বাংলাদেশের আবৃত্তি অঙ্গনকে আলোকিত করবে এই আশার বাণীই ফুটে উঠেছে আবৃত্তি শুনতে আশা সাধারণ দর্শক, শ্রোতা ও শিল্পজনদের চোখেমুখে। আমরা স্বপ্নযাত্রীর নান্দনিক শিল্পযাত্রার সফলতা কামনা করি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট