চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

টম অ্যান্ড জেরির ইতিহাস

যায়িদ লিটন

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ

টম অ্যান্ড জেরি কার্টুনের নাম শুনেনি বর্তমান সময়ের মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল বয়সের মানুষের কাছে পরিচিত একটি কার্টুন ‘টম অ্যান্ড জেরি’। বিড়াল এবং ইঁদুরের বাস্তব বৈরী সম্পর্কের কথা সবাই জানে। উইলাম হানা এবং জোসেফ বারবারা এই সম্পর্কটাকে মধুর আবার মারামারি, কাটাকাটি অবস্থায় উপস্থাপন করেছেন ‘টম অ্যান্ড জেরি’ কার্টুনের মধ্যদিয়ে।

‘টম অ্যান্ড জেরি’ কার্টুনে টম হল একটি নীলাভ রঙের, অনেক ক্ষেত্রে ধূসর ছাই রঙয়ের বিড়াল এবং জেরি হল বাদামি রঙয়ের একটি ইঁদুর যে একই বাড়িতে টমের সাথেই থাকে। সারাক্ষণ দুজনের মধ্যে অনেক কিছু নিয়ে মারামারি ঘটে। অনেক সময় টম জিতে যায়, আবার অনেক সময় জেরি জিতে যায়। টম একটু বোকা স্বভাবের আবার অন্যদিকে জেরি হল যেমন চালাক তেমনি দুষ্টু। এই দুই চরিত্রকে কেন্দ্র করে উইলিয়াম হানা এবং জোসেফ বারবারা, ‘মেট্রো-গোল্ডউইন মেয়ার’ স্টুডিও থেকে ১৯৪০ সালে সর্বপ্রথম ‘পুস গেটস দ্য বুট’ নামে প্রথম পর্ব প্রচারিত হয়। এরপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন পর্ব প্রচারিত হতে থাকে। শুরুতে উইলিয়াম হানা এবং জোসেফ বারবারা ১৯৪০ সাল থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত এম.জি.এম কার্টুন স্টুডিও থেকে বেশ কিছু পর্ব প্রচারিত করেন। তারা দুজন অনেক বছর পর ১৯৭৫ সালের দিকে আবার টম অ্যান্ড জেরি কার্টুন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
উইলিয়াম হানা এবং জোসেফ বারবারা ১৯৭৫ সালের দিকে নতুন করে আবার কাজ শুরু করার পূর্বে অর্থাৎ ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৭৪ সালের মধ্যে জেনে ডিচ এবং চাক জোন্স ‘টম অ্যান্ড জেরি’ নিয়ে কাজ করেন। আর তাই, টম এন্ড জেরি কার্টুনের আকার মাঝে বেশ কিছু পরিবর্তন আমরা দেখতে পাই। অর্থাৎ উইলিয়াম হানা ও জোসেফ বারবারা, জেনে ডিচ এবং চাক জোন্সের সৃষ্ট টম এবং জেরির চরিত্র দুটোর অংকন চিত্রের মধ্যে মিল নেই। চিত্র আঁকা যেমনই হোক না কেন টম অ্যান্ড জেরির দুষ্টামিমাখা কান্ডকারখানা সকল বয়সী মানুষদেরকে আনন্দ দিয়ে এসেছে।

যদিও আমরা এই কার্টুন সিরিজের মূল চরিত্রের বিড়াল এবং ইঁদুরটির নাম যথাক্রমে টম এবং জেরি নামে চিনি কিন্তু শুরুতে টমের নাম ছিল ‘জেসপার’ এবং জেরির নাম ছিল ‘জিঙ্ক’। ‘টম অ্যান্ড জেরি’ ছাড়াও আরো বেশ কিছু মজার চরিত্র আমরা দেখতে পাই। টম এবং জেরি ছাড়াও আরো অনেক চরিত্র পাওয়া যায় ‘টম অ্যান্ড জেরি’ কার্টুন সিরিজে। জেরিকে ধরতে কখনো কখনো টমকে অনাকাক্সিক্ষত চরিত্রের সাহায্য নিতে হয়। এমনি এক চরিত্র হল বাচ। বাচ হল গলিতে থাকা কালো রঙের নোংরা এক বিড়াল যে নিজেও জেরিকে ধরে খেতে চায়। আরও কিছু চরিত্র হল স্পাইক (কখনো কিলার অথবা বাচ হিসেবে ঘোষিত), রাগী ভয়ংকর দারোয়ান বুলডগ যে বিড়ালদের পিটাতে পছন্দ করে এবং ম্যামী-টু-শুস্, একজন আফ্রিকান আমেরিকান চরিত্র যার চেহারা কখনো দেখা না গেলেও দুষ্টুমি করলে টমের কপালে তার ঝাটাপেটা ঠিকই জোটে। এক পর্বে লাইটনিং নামের এক দ্রুত গতির বিড়াল থাকে যে খুব সাবলীলভাবেই জেরিকে ধরে ফেলে এবং ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে খায়। পরে জোট বেঁধে টম ও জেরি ওকে বের করে দেয়। পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে, জেরি একটি ধূসর রঙের ছোট ইঁদুর দত্তক নেয় যার প্রথম নাম ছিল নিবলস (পরবর্তীতে টাফি এবং কারও মতে টেরি)। নিবলস কথা বলতে পারে তবে সাধারণত বিদেশি ভাষায় যাতে করে পর্বের থিম এবং পারিপাশ্বিকতার সাথে সামঞ্জস্য থাকে।
১৯৫০ জুড়ে দেখানো হয় যে স্পাইকের একটি সন্তান আছে যার নাম টাইক। এই সংযুক্তি স্পাইকের চরিত্র কোমলতা যোগ করে এবং তাদের নিয়ে একটি সমসাময়িক স্বল্পস্থায়ী সিরিজ স্পাইক অ্যান্ড টাইক চালু হয়। টাইকের উপস্থিতিকে জেরি টমের বিরুদ্ধে আরেকটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।

১৯৫০ এর সময় যা টম অ্যান্ড জেরির প্রথম শট। আরেকটি অভিযান চরিত্র হল ছোট হলদে পাখি যার প্রথম উপস্থিতি ছিল ১৯৪৭ এর কিটি ফয়েলড এ যা কোয়াকার এর প্রাক্তন রূপ।
জেরির অনেক আত্মীয়ও রয়েছে যাদের কেবল একটি পর্বেই দেখা যায়। এদের মধ্যে জেরির কাজিন মাসলস এবং জেরির মামা পেকোস। ধারাবাহিক কার্টুন পর্ব ছাড়াও টম অ্যান্ড জেরির স্বল্প দৈর্ঘ্যরে মুভিও রিলিজ হয়েছে বেশ কয়েকটি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট