চট্টগ্রাম শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

অটোমান সাম্রাজ্যের

সুলতান সুলেমান

অনন্য রহমান

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ

তুরস্কে অটোমান সাম্রাজ্য যখন প্রতিষ্ঠিত হয় ও ক্রমেই বিস্তার লাভ করে তখন ষোড়শ শতাব্দীতে দশম সুলতান হিসেবে সিংহাসনে বসেন সুলতান সুলেমান খান।

১৪৯৪ সালের ৬ নভেম্বর তিনি জন্ম নেন তুরস্কে। তার পিতা সেলিম খান মারা গেলে তিনি ১৫২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বিশাল রাজ্যের দায়িত্ব নেন।

সুলতান সুলেমানের শাসন আমলে অটোমান সাম্রাজ্যের সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তির এতটা বিস্তার লাভ করে। যা এশিয়া ছাড়া ইউরোপ, আফ্রিকা বিস্তীর্ণ অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
রাজ কাজ পরিচালনা করার জন্য যে প্রজ্ঞা এবং বিচক্ষণতা দরকার সেটা সুলতান সুলেমানের মধ্যে ছিল।
এই জন্য পশ্চিমারা তাকে ‘ম্যাগনিফিসেন্ট বা মহামতি’ বলতেন। আবার তুরস্কে তিনি ‘কানুনি সুলতান’ নামে পরিচিত ছিলেন।
দৃঢ়চেতা একজন মানুষ ছিলেন সুলতান সুলেমান। অটোমানদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশের যুদ্ধ সময় তার বাচনভঙ্গি, বক্তব্যের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মনোবল দৃঢ়চিত্ত করেছেন।

সুলতান সুলেমানের সেনাবাহিনী রোমান সাম্রাজ্য এবং হাঙ্গেরির পতন ঘটায়। পারস্যের সাফাভিদ সুলতান, প্রথম তাহমাসবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেন এবং মধ্যপ্রাচ্যের বেশির ভাগ অঞ্চল দখল করে নেন।
তিনি উত্তর আফ্রিকার আলেজেরিয়াসহ বড় বড় অঞ্চলগুলো রোমান সাম্রাজ্যের হাত থেকে দখল করে নেন। অটোমান নৌবাহিনী ভূমধ্যসাগর থেকে লোহিত সাগর ও পারস্য উপসাগর পর্যন্ত তাদের আধিপত্য বজায় রাখে।

প্রশাসনিক কাজ:
তিনি যে শুধু সাম্রাজ্য বিস্তার করেছেন সেটাই না, সাম্রাজ্যের সুনির্দিষ্ট প্রশাসনিক প্রণালী তৈরি করেছিলেন তিনি। পরবর্তী তার উত্তরাধিকারীরা সেটা অনুসরণ করেছেন এমনকি আধুনিক তুরস্কে তার কিছু অনুসরণ করা হয়।
কবি সুলেমান:
তার সময়ে বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ বা সাংস্কৃতিক পরিম-লে উন্নয়ন ঘটেছিল। তাঁর সময়কে স্বর্ণযুগ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন ইতিহাসবিদরা। তিনি নিজে কবিতা লিখতেন।
‘মুহিব্বি’ নামে তিনি অসংখ্য কবিতা লিখেছেন। এ ছাড়া তার সময়ে বিশ্বখ্যাত স্থাপত্য নির্মিত হয়েছে। এই রকম নানা বিষয়ের মধ্যে তার প্রচ- সাংস্কৃতিক মননশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়।

হুররাম ও সুলেমানের কবর:
তিনি দীর্ঘ ৪৬ বছর রাজত্ব করেন। ১৫৬৬ সালের হাঙ্গেরি অভিযানের নেতৃত্ব দেয়ার উদ্দেশ্যে কনস্টান্টিনোপল হতে রওয়ানা হয়েছিলেন, তিনি হাঙ্গেরিতে যিগেটভারের যুদ্ধে অটোম্যান বিজয়ের পূর্বেই ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান।
ইতিহাসবিদরা মনে করেন, সেনাবাহিনীর মনোবল দুর্বল হয়ে যাবে এ কারণে তথ্য গোপন রাখা হয়। তাঁর মরদেহের একটি অংশ হাঙ্গেরি বিজয়ের পর সেখানে সমাহিত করা হয় এমন একটি বিতর্ক আজও চালু রয়েছে। তুরস্কে সোলাইমানী মসজিদে তাঁর কবর রয়েছে। সুলতান সুলেমান মারা যাওয়ার পর তার ছেলে দ্বিতীয় সেলিম অটোমান সাম্রাজ্যের সিংহাসনে বসেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট