চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫

ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির তীব্র বাগবিতণ্ডা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১ মার্চ, ২০২৫ | ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ভলোদিমির জেলেনস্কির বৈঠকে তীব্র বাগবিতণ্ডা হয়েছে। এদিন ইউক্রেনের বিরল খনিজসম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের কথা থাকলেও দুই নেতার মধ্যে বাগবিতণ্ডার পর সেটি আর হয়নি।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে ইউক্রেনের তেল, গ্যাস এবং বিরল খনিজসম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। উভয়ের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর চুক্তির বিষয়টি আর এগোয়নি।

এই বৈঠকে জেলেনস্কিকে আক্রমণ করে বক্তব্য দেন ট্রাম্প। জেলেনস্কি মার্কিন সামরিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের জন্য যথেষ্ট কৃতজ্ঞ নন এবং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন বলে অভিযোগ করেন ট্রাম্প। তিনি জেলেনস্কিকে বলেন, ‘আপনাকে হয় রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তি করতে হবে নইলে আমরা আর আপনাদের সঙ্গে নেই। আমরা না থাকলে আপনাকে একা লড়তে হবে।’

এক পর্যায়ে, ট্রাম্প জেলেনস্কিকে বলেন, তিনি মার্কিন সামরিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের জন্য যথেষ্ট কৃতজ্ঞ নন এবং তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন।

ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত শেষ করতে চান, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করতে চান এবং ইউক্রেনে ব্যয় করা অর্থ পুনরুদ্ধার করতে চান। অন্যদিকে জেলেনস্কি বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও নৈতিক সমর্থন পেয়েছিলেন, যা তার দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

বৈঠকে ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তির আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাকে একজন শান্তি প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মনে রাখা হবে।’  

এ সময় জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় কথা বলেন এবং ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলেন, ‘একজন হত্যাকারীর সঙ্গে কোনও আপস নয়।’

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের সময় ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতিকে তিন বছরের মার্কিন সমর্থনের জন্য অকৃতজ্ঞ বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প। এর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এবং নির্ধারিত সময়সূচির অনেক আগেই জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউস থেকে গাড়িতে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।

এদিন ইউক্রেনের খনিজসম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের একটি চুক্তির শর্তের মধ্যে ছিল, ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন খনিজসম্পদ থেকে আয়ের অর্ধেক একটি পুনর্গঠন তহবিলে জমা দেবে কিয়েভ। এই তহবিলের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় যৌথভাবে থাকবে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র। এই তহবিলের অর্থ কীভাবে ব্যয় করা হবে এবং কোন কোন খনিজ সম্পদ এর আওতায় থাকবে, সে সম্পর্কে এখনও নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তবে বলা হয়েছে, এর মধ্যে খনিজসম্পদ, জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের পাশাপাশি গ্যাস টার্মিনাল ও বন্দরের মতো অবকাঠামোগুলো এর আওতায় থাকবে।

এই চুক্তির আর্থিক মূল্য কত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেছিলেন, এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শত শত বিলিয়ন ডলার লাভ করবে।

আর জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি এমন কোনও চুক্তিতে সই করবেন না, যেখানে তার দেশকে কয়েক প্রজন্ম ধরে ঋণের বোঝা বইতে হবে। দুই রাষ্ট্রনেতা এমন বক্তব্য দিলেও সম্ভাব্য এ চুক্তির শর্ত সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

শেয়ার করুন