চট্টগ্রাম রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪

লেবাননকে দেউলিয়া ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৫ এপ্রিল, ২০২২ | ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ

লেবাননের উপপ্রধানমন্ত্রী সাদেহ আল-শামি তার দেশটিকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছেন। তার ভাষ্য, লেবানন একটি রাষ্ট্র এবং এর কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেছে। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুর্কিভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আনাদলু এজেন্সি।

আল-জাদেদ নামে স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলকে আল-শামি এ কথা জানান।

ক্ষতির ভাগাভাগি নিয়ে মতবিরোধের কোনো অবকাশ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত রাষ্ট্র দেউলিয়া হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও দেউলিয়া। এটি আমাদের জন্য বড় সমস্যা। অনেক ক্ষতি হয়েছে।

লেবাননের অর্থনীতির পতন শুরু হয় ২০১৯ সালের অক্টোবর দেশটির দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের অবসানের পর থেকে। গৃহযুদ্ধে বিবদমান পক্ষসমূহের নেতারা দেশটির রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন এবং নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় নামেন।

নতুন এই রাজনৈতিক নেতাদের তৎপরতায় প্রাথমিক পর্যায়ে উল্লম্ফন ঘটলেও পরবর্তীতে সীমাহীন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ফলে ধস নামে লেবাননের অর্থনীতির

ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশ অবমূল্যায়ন ঘটেছে লেবাননের মুদ্রা লেবানিজ পাউন্ডের। ফলে, খাদ্য, খাবার পানি, স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষার মতো অতি প্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা দিন দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে দেশটির সাধারণ মানুষের। প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হওয়ায় ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকছে না দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চলে।

বিশ্বের ক্ষুদ্রাতনের দেশসমূহের মধ্যে লেবানন অন্যতম, আয়তন মাত্র ১০ হাজার ৪৫২ বর্গকিলোমিটার। জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই আমদানি করতে হয় দেশটিকে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার জেরে বর্তমানে লেবাননের ৮২ শতাংশেরও বেশি মানুষ দরিদ্রের জীবনযাপন করছেন, বেকার অবস্থায় আছেন ৪০ শতাংশ মানুষ।

২০১৯ সালে যে অর্থনৈতিক সঙ্কট শুরু হয়েছিল, করোনা মহামারি ও ২০২০ সালে বৈরুত বন্দরে ব্যাপক বিস্ফোরণে তা আরও ঘনীভূত হয়। ওই বিস্ফোরণে ২১৬ জন নিহত হয়েছিলেন, আহত হয়েছিলেন কয়েক হাজার এবং রাজধানীর একাংশ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

তবে লেবাননের এই দুরবস্থার জন্য দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়ও কম নয়। জাতীয় ক্ষমতায় জেঁকে বাস রাজনীতিবিদরা গৃহযুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে অর্থনীতির পুনর্গঠনের জন্য বলতে গেলে প্রায় কোনো উদ্যোগই নেননি। ফলে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক দাতা ও ঋণদানকারী সংস্থাগুলোও দিন দিন দেশটিকে আর্থিক সহায়তা ও ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। সূত্র : ডেইলি সাবাহ

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন