চট্টগ্রাম সোমবার, ২০ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

এ সব জানলে স্ট্র ব্যবহারের আগে দু’বার ভাববেন

মরিয়ম বেগম

১৬ মে, ২০১৯ | ২:৩৭ পূর্বাহ্ণ

বিভিন্ন বেভারেজের সঙ্গেই স্ট্র দেওয়া হয়। কোল্ড কফি, জুস, শেক হোক বা কোনও কোল্ড ড্রিঙ্ক, প্রত্যেকটির সঙ্গেই থাকে স্ট্র। বেশ কিছু রেস্তরাঁয় খাবার পরিবেশনের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্যও নানা রকমের স্ট্র দেওয়া হয়। কাজেই স্ট্রয়ের ব্যবহার আমাদের জীবনে কম নয়। স্ট্র ব্যবহার করলে ভয়ানক কিছু রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে লছেন চিকিৎসকরা

স্ট্র ব্যবহারে সরাসরি পানীয়ের পাত্রে যেমন মুখ দিতে হয় না, তেমন লিপস্টিক ঘাঁটারও ভয় নেই। আবার কোল্ড কফি বা জুসের স্বাদ এতে ধীরে ধীরে উপভোগ করা যায়। প্রয়োজনে একাধিক স্ট্র দিয়ে একই পানীয় বিভিন্ন জন ভাগ করেও খাওয়া যায়।
কিন্তু এই স্ট্র কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? না কি স্ট্র ব্যবহার করলে ভয়ানক কিছু রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে? কী বলছেন
চিকিৎসকরা?
চিকিৎসকরা কিন্তু এই স্ট্র ব্যবহারকে মোটেও স্বাস্থ্যকর বলে দাবি করছেন না। বরং ঘন ঘন স্ট্র ব্যবহারে ‘না’ বলছেন অনেকেই। এক
পুষ্টিবিদের মতে, বেশি পরিমাণে স্ট্র ব্যবহার করলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। স্ট্রয়ের মধ্যে পেট্রোলিয়াম জাতীয় পলিথিন থাকে। এই উপাদান শরীরে মেদ জমতে দেয়। ফলে মোটা হওয়ার প্রবণতা থাকে।
স্ট্র দিয়ে পান করার সময়ে শুধু পানীয়ই নয়। পেটে অতিরিক্ত হাওয়াও যায়। যার ফলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। গ্যাসট্রিকের অসুখ থাকলে এই প্রবণতা স্বাভাবিক ভাবেই আরও বাড়ে। এমনকি হৃদযন্ত্রেও এই গ্যাসের সমস্যার প্রভাব পড়ে।
চুমুক দিয়ে পানি খাওয়ার সময়ে দাঁত ও মুখের মধ্যের ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার হয়ে যায়। স্ট্র দিয়ে পানি বা পানীয় খেলে তা হয় না। বরং নিয়মিত স্ট্র দিয়ে নরম পানীয় পান করলে মুখের কোনও নির্দিষ্ট একটা জায়গায় চিনি জমতে থাকে। যার ফলে ক্যাভিটি পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়াও শরীরে এই অতিরিক্ত চিনি জমে ক্ষতি হয়।
স্ট্র ব্যবহার করলে মুখে তাড়াতাড়ি বলিরেখা তৈরি হয়। স্ট্র দিয়ে পানীয় পান করার সময় পেশীতে চাপ পড়ে। নিয়মিত তাই এই অভ্যাস রাখলে মুখেও তার ছাপ পড়ে। এমনকি বলিরেখা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। ত্বক বিশেষজ্ঞ কৌশিক লাহিড়ীর মতে, স্ট্রয়ের মাধ্যমে পানীয় খাওয়ার সময় অনেকেই মুখের পেশীতে অতিরিক্ত পরিমাণে চাপ দেন। এতে ত্বকের ক্ষতি হয়।
কেবল গরম খাবারই নয়, ঠান্ডা খাবারের সংস্পর্শে এলেও স্ট্রয়ের অতি ক্ষুদ্র প্লাস্টিকের কণা মিশে যেতে পারে রক্তপ্রবাহের সঙ্গেও। যা যকৃতেও পৌঁছে যায়। মাইক্রো প্লাস্টিক যে মানুষের শরীরে ঢুকছে তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। কারণ, মানুষের বর্জ্যে তার নমুনাও মিলেছে।
সবোর্পরি স্ট্র তৈরি হয় প্লাস্টিক দিয়ে। বাজারচলতি পাতলা ফিনফিনে স্ট্র প্লাস্টিকের স্বাস্থ্যবিধি মেনে তৈরিও হয় না। আবার যে স্ট্র একটু মোটা, তা নিয়ম মেনে তৈরি হলেও শরীরের জন্য নিরাপদ নয়।
কাজেই স্ট্রয়ের মাধ্যমেও শরীরে প্লাস্টিক ঢোকে। যার মারাত্মক ক্ষতি সম্পর্কে আমরা কমবেশি ওয়াকিবহাল। তবু স্ট্র ব্যবহারে না নেই আমাদের। সেখানেই প্রমাদ গুনছেন
চিকিৎসকরা।
তা হলে উপায়? স্ট্রয়ের বিপদ থেকে বাঁচার কোনও বিকল্প রয়েছে কি? চিকিৎসকদের মতে, প্লাস্টিকের ব্যবহার বাদ দিয়ে কাগজের স্ট্র বা কাঠ, বাঁশের তৈরি স্ট্র ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ক্ষতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। তবে তাতেও ত্বকের বলিরেখার সমস্যা বা অতিরিক্ত হাওয়ায় গ্যাসের সমস্যা এড়ানো যায় না।
তাই স্ট্র ব্যবহার না করে সরাসরি পাত্রের গায়ে চুমুক দিয়ে পান করা তুলনামূলক
উপকারী। একটু পরিচ্ছন্ন এমন দোকান থেকে খাবার খেলে তা সম্ভব। আবার বাড়িতে এনে বাড়ির পাত্রে রেখে তা খাওয়াই সেরা বিকল্প হতে পারে।
[সূত্র : ম্যানস হেলথ]

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট